দাবি আদায়ে এবার উপাচার্যের অফিসের মেঝেতে বসে আন্দোলন করেছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কর্মকর্তারা। এ সময় তারা সিন্ডিকেটের আলোচ্যসূচিতে তাদের দাবিসমূহ অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান।

রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত দেড় ঘণ্টা উপাচার্যের অফিসে অবস্থান নেন তারা।

এর আগে চতুর্থ দিনের মতো আজ সকাল ৯টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে কর্মবিরতি শুরু করেন কর্মকর্তারা। আগামীকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠিতব্য সিন্ডিকেট সভার আলোচ্যসূচিতে তাদের দাবিসমূহ অন্তর্ভুক্ত করার দাবি নিয়ে উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলতে তার কার্যালয়ে যান। এ সময় উপাচার্য বিষয়টি নিয়ে আরও বিশদভাবে পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানিয়ে অফিস ত্যাগ করেন এবং কার্যালয়ের সভাকক্ষে শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দদের সঙ্গে গুচ্ছ নিয়ে একটি মিটিংয়ে অংশ নেন।

এরপর কর্মকর্তারা তাদের দাবিসমূহ সিন্ডিকেটের আলোচ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত না করা পর্যন্ত উপাচার্যের অফিস ত্যাগ না করার ঘোষণা দিয়ে মেঝেতে বসে পড়েন। এর দেড় ঘণ্টার মাথায় উপাচার্য শিক্ষক সমিতির সঙ্গে মিটিং শেষ করে বের হয়ে সোজা তার বাসভবনে ফিরে যান। এতে উপাচার্য আর ফিরে না আসায় আন্দোলন স্থগিত করা হয়।

এ বিষয়ে কর্মকর্তা সমিতির সভাপতি টিপু সুলতান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আগামীকালের সিন্ডিকেটের এজেন্ডায় আমাদের দাবিসমূহ অর্ন্তভুক্ত করতে হবে। এর আগেও বঙ্গবন্ধু পরিষদের কিছু নেতার আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করেছিলাম। কিন্তু সেটা প্রশাসন আমলে নেয়নি। তবে এবার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের ন্যায্য দাবি আদায়ের আন্দোলন চলবে।

সাধারণ সম্পাদক ওয়ালিদ হাসান মুকুট বলেন, আগামীকাল সিন্ডিকেটে আমাদের দাবিগুলো যেন এজেন্ডাভুক্ত করা হয় তার দাবি নিয়ে উপাচার্যের কাছে গিয়েছিলাম। বাংলোয় একটি নিয়োগ বোর্ড ছিল যার কারণে তিনি চলে যান এবং আমাদেরকে বিকালে এ বিষয়ে তার বাংলোতে দেখা করতে বলেছেন। সেখানে যদি আমরা কোনো সমাধান না পাই তাহলে আগামীকাল থেকে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাবো।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৬ জুলাই থেকে চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি ও পোষ্য কোটায় ভর্তিতে শর্ত শিথিল করাসহ ১৬ দফা দাবিতে ১ম দফায় আন্দোলন শুরু করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। শুরুতে দীর্ঘ এক মাসেরও অধিক সময় ধরে দৈনিক পাঁচ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করেন তারা। পরে গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে লাগাতার পূর্ণ কর্মবিরতিতে যান তারা। এ সময় তারা দাবি মেনে না নেওয়া হলে উপাচার্যকে হটানোর কঠোর হুঁশিয়ারি প্রদান করেন। পরে ২৪ সেপ্টেম্বর আন্দোলনের ৬১তম দিনে এসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন কর্তৃক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হলে আন্দোলন স্থগিত করা হয়। কিন্তু দাবি পূরণ না হওয়ায় দীর্ঘ পাঁচ মাস পর গত ৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম নিয়োগের বোর্ডকে কেন্দ্র করে পুনরায় আন্দোলনে নামেন তারা।

রাকিব হোসেন/এমজেইউ