রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে কোনো প্রকার ত্রুটি-বিচ্যুতি নেই। একটি শক্তিশালী বিশেষজ্ঞ টিম কর্তৃক প্রস্তুতকৃত ফলাফল যথাযথভাবে প্রকাশিত হয়েছে। পরীক্ষার্থীর আবেদন অনুযায়ী ৪ ইউনিটের ৫ জনের উত্তরপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। সেখানে প্রকাশিত ফলাফলের কোনো অসঙ্গতি পাওয়া যায়নি। 

সোমবার (১৮ মার্চ) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমপ্লেক্সে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ভর্তি পরীক্ষার ‘এ’ ইউনিটের প্রধান সমন্বয়ক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এস এম এক্রাম উল্ল্যাহ। 

তিনি বলেন, ভর্তি পরীক্ষার প্রকাশিত রেজাল্ট শতভাগ অথেনটিক। আমি ৫টা আবেদন ৪টা শিফট থেকে গ্রহণ করেছিলাম। তাদের সবাই সম্পূর্ণ কনফিডেন্ট ছিল নম্বর আরও বেশি পাবে। গ্রুপ ১-এর তৌফিক আহমেদ শিপন নামে আইডিয়াল কলেজের এক শিক্ষার্থীর ফল পুনর্মূল্যায়ন করে দেখা গেছে- সে ৫৪টা সটিক উত্তর করেছে। ২৪টা উত্তর ভুল করেছে। তার নোট নম্বর ৬১.৫০। যা প্রকাশিত ফলের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। গ্রুপ ২-এ সাদ্দাম হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী ১২-১৫ নম্বর কম পাওয়ার অভিযোগ তুলে ফল পুনর্মূল্যায়নের দাবি করে। তার সটিক উত্তর ৪৬টি। ভুল উত্তরের জন্য মাইনাস মার্ক শেষে সে পেয়েছে ৪৯ নম্বর। সীমান্ত দাস নামে গ্রুপ ৩-এর আরেক শিক্ষার্থী (রোল-১৫০১১৫) নম্বর কম পাওয়ার অভিযোগ করে। তার খাতা পুনর্মূল্যায়ন করে দেখা গেছে সে ১৬টি প্রশ্নের উত্তর করেনি। তার খাতায় প্রকাশিত ফলের সাথে কোনো প্রকার অসঙ্গতি পাওয়া যায়নি। গ্রুপ-৪ এ ফল পুনর্মূল্যায়নের দাবিতে নেত্রকোনা থেকে আসা এক শিক্ষার্থী (রোল-১৬৩৮৯৭) পেয়েছে  ৫১.২৫। এটিও প্রকাশিত ফলের সঙ্গে কোনো অসঙ্গতি নেই। 

গ্রুপ ২ এর সেট ৩-এ ৪টা প্রশ্ন ভুল হওয়া সম্পর্কে এক্রাম উল্ল্যাহ বলেন, এই প্রশ্নগুলো মূল্যায়নের বাইরে রাখা হয়েছে এবং প্রতিটি প্রশ্নে সবাইকে ১.২৫ দিয়ে গুণ করে ৫ মার্ক যোগ করে দেওয়া হয়েছে। 

তিনি বলেন, অনেক শিক্ষার্থীরা বাবা-মাকে সন্তুষ্ট করার জন্য নম্বর বেশি পাওয়ার আবদার করে থাকে। সেখান থেকেই একটি কুচক্রী মহল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার ছড়ায়।

এ সময় ভর্তি পরীক্ষার খাতা মূলয়ায়ন কমিটির বিশেষজ্ঞ কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক মো. মুর্শেদুল আরেফিন উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, এখানে মার্ক কম বেশি করার সুযোগ নেই। সফটওয়্যার দিয়ে উত্তরপত্র ক্রস ম্যাচ করা হয়। সব ইউনিটেই ৮০ এর বেশি মার্ক আছে। সুতরাং প্রকাশিত ফলাফল নির্ভুল ও সঠিক। 

আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক আ.ন.ম ওয়াহিদ বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল স্বচ্ছতার সঙ্গে হয়ে থাকে। যা দেশব্যাপী প্রশংসিত। তবে কিছু কুচক্রী মহল আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সুনামকে ম্লান করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এটা এখন দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। এই কুচক্রী মহলের মুখোশ উন্মোচন করতে এখানে উপস্থিত সাংবাদিক ভাইদের অনুরোধ জানাচ্ছি। 

সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক দুলাল চন্দ্র বিশ্বাস, ইনস্টিটিউট অব ইংলিশ অ্যান্ড আদার ল্যাঙ্গুয়েজেজের পরিচালক অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মামুন, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক আ.ন.ম ওয়াহিদসহ ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনায় যুক্ত থাকা একাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘এ’ ইউনিটের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই ‘কম নম্বর দেওয়ার’ অভিযোগ তুলেন শতাধিক শিক্ষার্থী। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও বেশ আলোচনার জন্ম দেয়

জুবায়ের জিসান/আরএআর