চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আবাসিক হল রুমে মাদক সেবন ও কেনাবেচার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ কর্মী আশিকুজ্জামান জয়ের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আশিকুজ্জামান জয়ের রুমটি সিলগালা করে দেয়। 

জানা যায়, আশিকুজ্জামান জয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের উপগ্রুপ বিজয়ের অনুসারী। তিনি আবাসিক এ এফ রহমান হলের ৪৪০ নম্বর রুমে বসে মাদক সেবন করে থাকেন। বেশ কিছু ছবিতে তাকে ওই রুমে বসে মদ পান করতে দেখা গেছে।

গত সোমবার (২২ এপ্রিল) রাত ১১টার দিকে মাদক সেবনের জের ধরে বিজয় গ্রুপের অনুসারীদের মধ্যে মারধরের ঘটনা ঘটলে আশিকুজ্জামানের মাদক সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি গণমাধ্যমের সামনে উঠে আসে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আশিকুজ্জামান জয় দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে মাদক সরবরাহের সঙ্গে জড়িত। তিনি গাঁজা, মদ, ইয়াবাসহ ক্যাম্পাসে সব ধরনের মাদকদ্রব্য সিনিয়র ও জুনিয়রদের মাঝে সরবরাহ করত। তার হলের রুমে বিভিন্ন ধরনের দেশি-বিদেশি মাদকদ্রব্য পাওয়া গেছে। মদ পান করা অবস্থায় তার কয়েকটি ছবিও ঢাকা পোস্টের হাতে এসেছে।

এ বিষয়ে জানতে মোবাইল ফোনে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

আশিকুজ্জামানের ব্যাচমেট ও ছাত্রলীগের উপগ্রুপ বিজয়ের এক কর্মী ঢাকা পোস্টকে বলেন, সে দীর্ঘদিন ধরে মাদক সেবন ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত। সে সবসময় মাদকাসক্ত থাকে এবং সবার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে বেড়ায়। ৩ বার বাংলা চ্যানেল জয় করা চবির সালাউদ্দিনের ভাইয়ের সঙ্গে সে খারাপ আচরণ করেছে। বাংলাদেশ স্টাডিজের বড় ভাই মাজহারুলের সঙ্গেও সে খারাপ আচরণ করেছে।

চবির এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. আলী আরশাদ চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে খবর পেয়ে হলের ৪৪০ নম্বর রুমে গিয়েছিলাম। তখন ওখানে কোনো শিক্ষার্থী ছিল না। তবে আমরা কিছু মদের খালি বোতল পেয়েছি। সেগুলো সঙ্গে করে নিয়ে এসেছি। বোতলগুলো কে ব্যবহার করেছে তা আমরা জানি না। তদন্ত করে এ বিষয়ে বলতে পারবো। আর হলের ৪৪০ নম্বর রুমটি সিলগালা করে রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে চবির সহকারী প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক ড. লিটন মিত্র ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ বিষয়ে আমরা জানতে পেরেছি। মাদকের কিছু ছবিও আমাদের কাছে এসেছে। মাদকের বিষয়ে সবসময় আমরা জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করি। এ বিষয়ে আমরা সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার (২২ এপ্রিল) আশিকুজ্জামান জয় ও ছাত্রলীগের উপগ্রুপ বিজয়ের কিছু কর্মীর মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও মারধরের ঘটনা ঘটে। পরে মারধরের ঘটনায় খোঁজ নিতে গেলে আশিকুজ্জামানের মাদক সেবনের বিষয়টি গণমাধ্যমকর্মীদের দৃষ্টিগোচর হয়।

আতিকুর রহমান/আরকে