নুরুল হক নুর/ফাইল ছবি

দমন-পীড়নে ভূমিকার ভিত্তিতে পুলিশের পদোন্নতি দেওয়া হয় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।

সোমবার (৩ মে) দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে ‘উদ্বিগ্ন অভিভাবক সমাজ’-এর ব্যানারে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে আগমনের প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি থেকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার ছাত্র-জনতার নিঃশর্ত মুক্তি ও ভিত্তিহীন মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

নুরুল হক নুর বলেন, বামপন্থী, ডানপন্থী, মানবাধিকার সংগঠনের কর্মী, সাংবাদিক, অ্যাক্টিভিস্ট, বুদ্ধিজীবী- সবাই বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নরেন্দ্র মোদির আগমনের বিরোধিতা করেছিল। আমরা তো ঢাল, তলোয়ার কিংবা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে মোদির আগমন ঠেকাতে এয়ারপোর্টে যাইনি। তার আগমনের দিনেও তো রাজপথে নামিনি। তিনি আসার আগের দিন আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম। সেদিন সবাই দেখেছে মতিঝিলে কীভাবে পুলিশ আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে সেই কর্মসূচিকে পণ্ড করে দিয়েছিল।

তিনি বলেন, মজার বিষয় হলো, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় পুলিশের বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছিল। তাদের এ পদোন্নতিতে বিবেচনা করা হয়েছিল কোটা সংস্কার আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে দমন-পীড়নে তাদের ভূমিকাকে। বিভিন্ন পত্রিকায় এ বিষয়ে রিপোর্ট হয়েছিল। একইভাবে মোদিবিরোধী আন্দোলনের পরপরই কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে একজন হলেন আলোচিত-সমালোচিত ডিসি হারুন। এভাবে যদি অপকর্ম করার জন্যে তাদের পদোন্নতি দেওয়া হয়, তাহলে তারা অপকর্মে উৎসাহ পাবেন। 

ডাকসুর সাবেক এ ভিপি বলেন, আমাদের ছাত্ররা কি চাঁদাবাজি-টেন্ডারবাজি করেছিল? তাহলে তাদেরকে কেন গরুর মতো কোমরে দড়ি বেঁধে আদালতে হাজির করা হয়? কাশিমপুর কারাগারে বন্ধুদের খোঁজ-খবর নিতে এবং তাদের খাবার দিতে গিয়ে আমাদের পাঁচজন আটক হয়েছেন। কারাফটক থেকে এভাবে আটক করা কতটা অমানবিক! এরকম কি কোনো আইন এদেশে আছে? 

হাস্যকরভাবে আরও কয়েকজন ছাত্রনেতাকে আটক করা হয়েছে। তাদের নামে কোনো মামলাও ছিল না। তাদের একেকজনকে একেক মামলায় ধরে রিমান্ডের পরে যখন আদালতে জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়, তখন আবার নতুন কোনো মামলায় তাদের জড়ানো হয়। এর মাধ্যমে যারা বাইরে আছেন, তাদের ভয় দেখানো হয়। তাই বলে কি আমরা থেমে যাব? এ পরিণতির কারণে কি আমরা হেরে যাব? কখনোই না- বলেন নুর। 

তিনি বলেন, আজ বাংলাদেশে যে একটি ভয়ার্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে, তাতে আমাদের কারো মনোবল দুর্বল হয়নি। যদি সরকার ভেবে থাকে, এই ৫৬ জন ছাত্রনেতাকে গ্রেফতার করে দেশের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করবে, তা কখনো হবে না। তাদের যদি মুক্তি দেওয়া না হয়, তাহলে আমাদের ঈদ হবে গণভবনের সামনে।

অবস্থান কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম বাবলু, বীর মুক্তিযোদ্ধা নঈম জাহাঙ্গীর, শ্রমিক অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুর রহমান ও সদস্য সচিব আরিফ হোসেন।

এইচআর/আরএইচ