সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা বাতিল এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে চতুর্থ দিনের মতো বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা বলেন, যেকোনো মূল্যে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা বাতিল করতে হবে। শিক্ষার্থীদের গায়ে শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত কোটা নিয়ে টালবাহানা করতে দেওয়া হবে না।

শনিবার (৬ জুলাই) দুপুরে কলেজের মূল ফটকে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। পরে মিছিল নিয়ে সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় ঘুরে নীলক্ষেত হয়ে ইডেন মহিলা কলেজের দিকে চলে যান শিক্ষার্থীরা।

এসময় শিক্ষার্থীদের ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে ওঠো আরেকবার’, ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘সংবিধানের মূল কথা, সবার জন্য সমতা’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’, ‘সারা বাংলায় খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে’-সহ বিভিন্ন কোটা বিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, স্বাধীনার এত বছর পরে এসেও কোটা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বেআইনি। কোটার মাধ্যমে সরকারি চাকরিতে একটি শ্রেণির লোকদের বাড়তি সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। বাকি লাখ লাখ শিক্ষার্থী ও বেকার সমাজ তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। কোটা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে।

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান বলেন, কোটা ব্যবস্থা অবশ্যই বাতিল করতে হবে। কিছু ব্যক্তিকে সুযোগ দিয়ে বাকি লাখ লাখ ছাত্র ও বেকার সমাজকে বঞ্চিত করা যাবে না। কোটা ব্যবস্থা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে। সারা দেশের ছাত্র সমাজ এই কোটা ব্যবস্থা বাতিল চায়।

প্রসঙ্গত, গত ৫ জুন সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এরপর ৯ জুন হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওইদিন এই আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত।

সেদিন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছিলেন, সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকবে, না কি বাতিল হবে এ বিষয়ে আপিল বিভাগই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

পরে গত বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় আপাতত বহাল রাখার নির্দেশ দেন।

এর আগে, ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে সরাসরি নিয়োগে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি তুলে দিয়ে পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

আরএইচটি/জেডএস