আরাফাত চৌধুরী

করোনার কারণে সংকটে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়িয়েছে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও সেভ দ্য টুমরো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক আরাফাত চৌধুরী।

জানা গেছে, আর্থিকভাবে অসচ্ছল ৫০ ঢাবি শিক্ষার্থীর মাঝে প্রায় এক লাখ টাকার ঈদ উপহার দিয়েছেন ঢাবির আইন বিভাগের এই শিক্ষার্থী। ‌‘হাসি ফোটাবোই’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সহায়তার জন্য ‘ভালবাসার ঈদ উপহার’ নামে এই উদ্যোগ গ্রহণ করেন তিনি।

শিক্ষার্থীদের নাম-পরিচয় সম্পূর্ণ গোপন রেখে তাদের পরিবারের আর্থিক অসচ্ছলতা ও পরিবারের সদস্য সংখ্যার উপর ভিত্তি করে নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন তিনি। যেসব শিক্ষার্থীদের আর্থিক সমস্যা একটু বেশি প্রকট তাদের দুই হাজার টাকা ও যাদের তুলনামূলক কম সমস্যা তাদের ১৫শ টাকা করে ‘ভালবাসার ঈদ উপহার’ পৌঁছে দিয়েছেন তিনি।

সংকট মুহূর্তে এ উপহার পেয়ে আনন্দ প্রকাশ করেছেন সুবিধাভোগীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুবিধাভোগী এক শিক্ষার্থী বলেন, আরাফাত ভাইয়ের এই উপহারের কারণে আজ আমাদের পরিবারের সবার মুখে হাসি ফুটেছে। পরিবার নিয়ে এখন ভালভাবে ঈদ করতে পারবে। এ টাকা দিয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো কিনতে পেরেছি। আমার পরিবারের এই দুর্দিনে তিনি আমাদের আশার আলো দেখিয়েছেন।

কেন এ উদ্যোগ জানতে চাইলে আরাফাত চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, লকডাউনের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীর পরিবার উপার্জনহীন হয়ে পড়ে। যার দরুন অভাব-অনটন ও আধবেলা খেয়ে দিন কাটালেও চক্ষুলজ্জা ও আত্মমর্যাদার কথা ভেবে মুখ বুঝে কষ্ট সহ্য করে গেছে। ঢাবি শিক্ষার্থীদের অনেকেই ম্যাসেজ ও ফোন করে তাদের কষ্টে দিনযাপনের করুণ কথা জানালে আমার হৃদয়স্পর্শ করে যায়। তাই তাদের কষ্ট লাঘব করে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে এ উদ্যোগ গ্রহণ করি।

এ কার্যক্রমে আর্থিক সহযোগিতা কারা করেছে এমন প্রশ্নের জবাবে ঢাবির আইন বিভাগের এই শিক্ষার্থী বলেন, এ উদ্যোগ নেওয়ার পর থেকে ঢাবির অগ্রজরা সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। মানবিকবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুজদের দুর্দিনে পাশে দাঁড়ানোর জন্য তারা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত যথেষ্ট সহযোগিতা করেছেন। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অনেক শিক্ষার্থীও এ উদ্যোগে সাড়া দিয়ে আর্থিক সহযোগিতা করেছে। পাশাপাশি আমার নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী চেষ্টা করেছি তাদের পাশে থাকতে।

সহযোগিতা করতে পারার অনুভূতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঈদ মানে শুধু নিজে ভাল থাকা নয়, বরং সবাইকে নিয়ে ভাল থাকাতেই ঈদের প্রকৃত আনন্দ। আমি নিজের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছি কিছু পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে। ঈদের আনন্দটুকু তাদের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে। ঢাবি শিক্ষার্থীরা খুশি মনে তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে পারলেই আমার এই উদ্যোগ সার্থক হবে। আর তাদের পরিবারের এই হাসি ও আনন্দ আমার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি ও পরিতৃপ্তি।

এইচআর/ওএফ