ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শহীদ নজির আহমদের নামে কলাভবনের নামকরণসহ চার দফা দাবিতে উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়েছে বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ।

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) শহীদ নজির আহমদের ৮২তম শাহাদাত বার্ষিকীকে ‘সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী দিবস’ পালন কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিকেলে উপাচার্যের কাছে তার কার্যালয়ে স্মারকলিপি তুলে দেন বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের নেতাকর্মীরা।

পরিষদের সাধনা দাবিগুলো হচ্ছে— ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শহীদ হওয়ায় প্রশাসনিকভাবে ‘সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী শহীদ নজির আহমদ দিবস’ পালন করা; দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দিবসটি পালনে সরকারকে প্রস্তাব প্রদান করা; ⁠ঔপনিবেশিক আমলে মুসলমানদের ওপর পরিচালিত শোষণ-নির্যাতন-সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস বিষয়ক অধ্যয়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি স্টাডি সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা।

এসব দাবির প্রেক্ষিতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেছেন, আমরা ইতিহাসে ভূমিকা রাখা সবার সম্মান ফিরিয়ে দিতে চাই। শহীদ নজির আহমদের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর অ্যাসেম্বলিতে পর্যালোচনা করা হবে। ছাত্রদের দাবির যথার্থতা পাওয়া গেলে আমরা অবশ্যই শহীদ নজির আহমদকে সম্মান জানাবো।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আবদুল ওয়াহেদ, সদস্যসচিব ফজলুর রহমান, যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়ামিন সরকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম নূর শাফায়েতুল্লাহ ও নিয়াজ আহমদ, সদস্যসচিব মুহিব মুশফিক খান, বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম ও সদস্যসচিব মো. ফরহাদ আহমেদ আলী প্রমুখ।

এর আগে সকাল ৯টায় শহীদ নজিরের সমাধিস্থল আজিমপুর কবরস্থান জিয়ারত করে ‘সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী শহীদ নজির আহমদ দিবস’ এর কর্মসূচি শুরু করে সংগঠনটি।

উল্লেখ্য, শহীদ নজির ঔপনিবেশিক জমানায় তৎকালীন নোয়াখালী জেলার (বর্তমানে ফেনী) আলিপুর গ্রামের একটি দরিদ্র মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। 

কিন্তু সেই সময়েও দারিদ্র্যকে জয় করে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন। তিনি সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের ছাত্র হিসেবে বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণীতে অধ্যয়ন করতেন। তিনি অল ইন্ডিয়া মুসলিম ছাত্র পরিষদের শীর্ষ নেতা ছিলেন। 

১৯৪৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনে (বর্তমান ঢাকা মেডিকেল কলেজের পুরাতন ভবন) ক্লাস চলাকালীন মুসলমান ছাত্রদের ওপর কংগ্রেসপন্থী সাম্প্রদায়িক হিন্দু ছাত্ররা হামলা চালায়। তারা লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে শহিদ নজিরকে হত্যা করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তথা বাংলাদেশের ইতিহাসে শহিদ নজির আহমদ হত্যাকাণ্ড ছিল শিক্ষাঙ্গনের প্রথম সন্ত্রাসের ঘটনা।

এমএইচএন/এমএ