শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে শিক্ষার্থীদের গণসমাবেশ

১ জুন (মঙ্গলবার) থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিতে অনলাইন ও অফলাইনে গণস্বাক্ষর গ্রহণ কর্মসূচি শুরু করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ উপলক্ষে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘর সামনে রোববার (৩০ মে) বিকেলে এক গণসমাবেশ আয়োজন করা হয়। সমাবেশ থেকে আগামী বেশ কয়েকদিন এই কর্মসূচি চলবে বলে জানানো হয়।

সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- ‘অবিলম্বে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিন’ আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মশিউর রহমান, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুহম্মদ শামসুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এম রাহাত, সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী নুর মুহাম্মদ সুমনসহ আরও অনেকে। এছাড়া সেখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শতাধিক শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষামন্ত্রী গতকাল (শনিবার) বলছেন, অভিভাবকরা নাকি চায় না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হোক। ওনার কাছে নাকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের বার্তাই আসে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পক্ষে বিভিন্ন সংস্থার জরিপের ফল উল্লেখ করে শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর কাছে সেই সব সংখ্যাগুরু অভিভাবকের বার্তা কেন এসে পৌঁছায় না? কেন শুধু সংখ্যালঘু অভিভাবকদের বার্তাই পৌঁছায়, তা আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির ‘সংক্রমণের হার পাঁচ শতাংশের নিচে নামলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে’- এই মন্তব্যের বিষয়ে তারা বলেন, গত জানুয়ারিতেও সংক্রমণের হার পাঁচ শতাংশের নিচে নেমে যায়, তখন কেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হলো না? ফেব্রুয়ারির শুরুতে দেশে সংক্রমণের হার দুই শতাংশেরও নিচে নেমে আসে। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে টিকা কার্যক্রম শুরু পর থেকেই সংক্রমণ ও মৃত্যুহার বাড়তে থকে।

এ সময় শিক্ষার্থীরা করোনার টিকার বিষয়ে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী বিশেষজ্ঞ লুক মন্টাগনিয়ার  উদ্ধৃতি দেন। তারা বলেন, বাংলাদেশে আবারও টিকা কার্যক্রম গতিশীল হচ্ছে। এখন যদি ফের করোনার মাত্রা বৃদ্ধি পায়, তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ বছরও খুলবে না। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সঙ্গে টিকাদান বা সংক্রমণ হারের হ্রাস-বৃদ্ধির কোনো শর্তারোপ করা কখনও ঠিক হবে না। বরং বিনা শর্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে।

তারা আরও বলেন, শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেছেন, ‘আন্দোলনের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে আমরা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলতে পারি না’। অথচ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাসায় বসে থাকলে বরং আরও স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে। কারণ দীর্ঘদিন ঘরে আবদ্ধ থাকলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়, যা রোগাক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে, এটা খুবই ভয়ংকর। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বাসায় আবদ্ধ থাকা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে পুরো একটি প্রজন্মকে শারীরিক ও মানসিকভাবে ধ্বংস করে দেয়া হচ্ছে, যা করোনার ক্ষতি থেকে আরও বেশি ভয়ংকর ও সুদূরপ্রসারী। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রী সেই ক্ষতির কথা আমলেই আনছেন না।

এইচআর/এফআর