খোঁজ নেই তদন্ত কমিটির
৯ দিন ধরে বন্ধ ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
রাজধানীর ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ) গত ৯ দিন ধরে অচলাবস্থার মধ্যে রয়েছে। উপাচার্যসহ ১১ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তার একযোগে পদত্যাগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৮ এপ্রিল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু সংকট সমাধানে ট্রাস্টি বোর্ড গঠিত স্বাধীন তদন্ত কমিটির কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি এখনো চোখে পড়েনি। এমনকি ৭ কার্যদিবসের মধ্যে জমা দিতে বলা তদন্ত প্রতিবেদনের অগ্রগতি জানতে কমিটি প্রধানের কাছে ই-মেইল পাঠিয়েও কোনো সদুত্তর মিলেনি।
জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে ‘ইউআইইউ রিফর্ম’ নামে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের পটভূমিতে গত ২৬ এপ্রিল উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবুল কাশেম মিয়া তার পদ থেকে সরে দাঁড়ান। এরপর একে একে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, বিভাগীয় প্রধান ও বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালকরাও প্রশাসনিক পদত্যাগ করেন। ফলে কার্যত অচল হয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, যার পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষাকার্যক্রম স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।
বিজ্ঞাপন
পরবর্তী সময়ে ২৮ এপ্রিল ট্রাস্টি বোর্ড সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মো. মুজিবুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও তদন্ত অগ্রগতির কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
সোমবার (৫ মে) কমিটি প্রধানের কাছে এবিষয়ে জানতে ই-মেইল পাঠানো হলেও তিনি এবিষয়ে জবাব দেননি।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
তবে দ্রুতই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা-কার্যক্রম চালুর ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ট্রাস্টির কাছে এরইমধ্যে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক ড. মো. সুলতান মাহমুদ ভূঁইয়া। ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, আমরা চাইনা কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা-কার্যক্রম বন্ধ থাকুক। দ্রুতই যেন ইউআইইউ এর অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয় সে ব্যাপারে আমরা কথা বলেছি।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীরাও আমাদের কাছে এসেছিল। তারাও ক্লাসে ফিরতে চাচ্ছে। সে অনুযায়ী আমরাও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি।
অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাড়ছে উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে অ্যাকাডেমিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন সংক্রান্ত ১৩ দফা যৌক্তিক দাবি উপেক্ষা করে আসছিল কর্তৃপক্ষ। বরং আন্দোলন দমন করতে নানা কৌশল গ্রহণ করা হয়, যার ফলশ্রুতিতে এমন সংকটজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
তারা আরও অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে’ পরিণত করা হয়েছে এবং বাড়ানো হয়েছে নানা ধরনের ফি, যা শিক্ষার্থীদের ওপর অযৌক্তিক আর্থিক চাপ তৈরি করেছে। এমন অবস্থায় দ্রুত স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
আরএইচটি/এসএম