ভূমিকম্পে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার ভবনে ফাটল

সম্প্রতি সিলেটে দফায় দফায় সংগঠিত ভূমিকম্পে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ভবনে ফাটল দেখা দিয়েছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন, ইউনিভার্সিটি সেন্টার (ইউসি) ও শহীদ মিনারসহ কিছু ভবনে ফাটল লক্ষ্য করা গেছে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মাঝে উদ্বিগ্নতা বিরাজ করছে।

গত ২৯ ও ৩০ মে সংগঠিত ভূমিকম্পে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগার ভবনের সামনের দিকে প্রধান ফটকের বাম দিকে দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থতলার বাইরের অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। এরমধ্যে তৃতীয় এবং চতুর্থতলার দেয়ালের ফাটলটি তুলনামূলক বড়।

এছাড়াও মূল ফটকের ডান দিকে তৃতীয় তলার দেয়ালেও ছোট ফাটল লক্ষ্য করা যায়। ফাটলগুলো নতুন বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন কর্মচারী ও গার্ড।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউনিভার্সিটি সেন্টারের একাধিক দেয়াল এবং পিলারে অসংখ্য ফাটল দেখা দিয়েছে। এরমধ্যে একাধিক পিলারসহ বিভিন্ন জায়গায় বড় ধরনের ফাটল রয়েছে। এছাড়াও ভবনটি কিছুটা একপাশে দেবে গেছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। সরেজমিনে ভবনটির দোতলার মেঝে কিছুটা একপাশে দেবে গেছে বলেও অনুমান করা যায়।

একাডেমিক ভবনের কয়েকটি দেয়ালে ফাটল লক্ষ্য করা গেছে। ভূমিকম্প ঝুঁকিতে রয়েছে শাবিতে অবস্থিত দেশের সবচেয়ে উঁচু শহীদ মিনারও। শহীদ মিনারের মূল বেদিতে ওঠার আগে দুপাশের দেয়াল মূল অংশ থেকে সরে গেছে বলে লক্ষ্য করা যায়। এছাড়াও শহীদ মিনারের পেছনের দেয়ালেও ফাটল দেখা দিয়েছে। ভূমিকম্পে যেকোনো সময় তা ভেঙে নিচে পড়তে পারে।

ভূমিকম্পের জন্য আগে থেকেই ঝুঁকিতে আছে সিলেট অঞ্চলসহ তার আশেপাশের এলাকা। এই অঞ্চলে অতীতে তিনবার বড় ধরনের ভূমিকম্প হওয়ার ইতিহাস আছে বলে জানা যায়।

এর মধ্যে ১৮৬৯ সালে সিলেট অঞ্চলে রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এটি ছিল সে অঞ্চলের কাছার এলাকায়। এরপর ১৯১৮ সালে শ্রীমঙ্গলে এবং ১৯২৩ সালে দুর্গাপুরে ভূমিকম্প হয়। যেগুলো বড় ধরনের ভূমিকম্প হিসেবে রেকর্ড করা হয়।

তবে সম্প্রতি গত ২৯ মে, ৩০ মে এবং সর্বশেষ ৭ মে দফায় দফায় এ অঞ্চলে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ২৯ মে সরকারি হিসাবমতে দফায় দফায় পাঁচবার মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এরপর ৩০ মে সকালে আবারও ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এরপর সর্বশেষ ৭ জুন সন্ধ্যায় এক মিনিটের ব্যবধানে পর পর দুইবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়।

এসব ছোট ছোট ভূমিকম্প বড় ধরনের ভূমিকম্পেরই ইঙ্গিত বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। সে হিসাবে বড় ধরনের ভূমিকম্প ঝুঁকিতে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনগুলো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবু হেনা পহিল বলেন, পরীক্ষা করে যেসব ভবন দ্রুত সময়ে সংস্কার করা যাবে সেগুলো সংস্কার করা হোক আর যেগুলো ব্যবহার অনুপযোগী সেগুলো ঘোষণা দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হোক।

উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা বিষয়গুলো সম্পর্কে অবগত হয়েছি। এ ব্যাপারে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যায়, বুধবার (৯ জুন) আমরা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করব। তারপর আমরা সে বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করব।

এমএসআর