রাতে ফেসবুকে লিখলেন ক্ষমা চাচ্ছি, ভোরে মৃত্যু
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের ৪র্থ শিক্ষার্থী সঞ্জয় বাড়ৈ। থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়েরই জগন্নাথ হলে। হবিগঞ্জের চা শ্রমিক বাবা-মায়ের সন্তান, সংগ্রাম করে শিক্ষাজীবন অতিবাহিত করছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সবুজ চত্বরে।
তবে ‘কঠিন সময়ে ধৈর্য ধরো’ বলা ছেলেটা আজ আত্মহত্যা করে পরপারে পাড়ি জমালেন। আত্মহত্যার আগে তার দেওয়া ফেসবুক স্টেটাস থেকে ধারণা করা হচ্ছে প্রেম ঘটিত বিষয় নিয়ে হতাশার কারণে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
বিজ্ঞাপন
৬ দিন আগে সঞ্জয় তার দেওয়া এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, জীবন ছোট্ট তবে সুন্দর, কঠিন সময়ে ধৈর্য ধরো, অপেক্ষা করো, সমস্যা আসবেই, ধৈর্যের সঙ্গে সমাধানের পথ খুঁজো, দেখবে একদিন সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
কিন্তু কঠিন সময়ে ধৈর্য ধরতে পারলেন না তিনি। বেছে নিলেন আত্মহত্যার পথ। গতকাল (১৩ জুলাই) রাতে তিনি তার ফেসবুক টাইমলাইনে লেখেন, আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি, আমি দিনের পর দিন কাউকে ডিস্টার্ব করে গেছি, উল্টো মানুষকে দোষারোপ করা আমার একদম ঠিক হয়নি, আমি সকলের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। আমি দিনের পর দিন অন্যায় করেছি, নিজের দোষ ঢেকে অপরজনকে দোষ দেওয়া আমার ঠিক হয়নি। আমি সকলের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি, আমার কারণে কারো কোনো ক্ষতি হলে সে দায় একান্তই আমার, আমি ক্ষমা চাচ্ছি।
সোমবার (১৪ জুলাই) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে জগন্নাথ হলের নবনির্মিত রবীন্দ্র ভবনে ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন তিনি।
তার আত্মহত্যার বিষয়টি নিশ্চিত করে জগন্নাথ হলেও প্রাধ্যক্ষ দেবাশীষ পাল বলেন, সঞ্জয় নামে ছেলেটি কিছুদিন ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। প্রেম ঘটিত কারণে তিনি মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন বলে ধারণা করছেন হলের অন্যান্য শিক্ষার্থীরা। তার বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি গত দুদিন ধরে সে হলেও থাকে না। আজ ভোর ৪ টার দিকে সে হলে আসে এবং ৪টা ১০ মিনিটে হলের ছাদে যায়। সেখান থেকে সে লাফ দেয়।
তিনি বলেন, আনুমানিক ৫টা ৩৬ মিনিটে একজন ক্লিনার তার কাজ করার সময় উপর থেকে কিছু পড়ার শব্দ পায়। কাছে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় একজনকে পড়ে থাকতে দেখে। পরবর্তীতে দারোয়ানকে জানালে তিনি আমাকে অবগত করে এবং অন্যান্যদের সহায়তায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আমার প্রথমে তার পরিচয় সনাক্ত করতে পারছিলাম না। পরবর্তীতে শাহবাগ থানা থেকে পুলিশ এসে তার পকেট থেকে একটা নৃবিজ্ঞান বিভাগের প্রশ্ন পায়। তারপর আমরা তার সহপাঠীদের কাছ থেকে তার পরিচয় জানতে পারি।
এসএআর/এমএসএ