চবি ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুন বহিষ্কার
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের আগ মুহূর্তে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ মামুনুর রশিদ মামুনকে আজীবনের জন্য সাংগঠনিক পদ থেকে বহিষ্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল।
তবে জানা গেছে, এই বহিষ্কারের পেছনে মূলত চাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে চবি ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল এবং বিদ্রোহী প্যানেল গঠনের বিষয়টিই মুখ্য ভূমিকা রেখেছে।
বিজ্ঞাপন
গতকাল রোববার (১২ অক্টোবর) রাতে ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে মামুনের বহিষ্কারের বিষয়টি জানানো হয়।
ছাত্রদল সূত্রে জানা গেছে, চাকসু নির্বাচনে ছাত্রদল প্যানেলে মামুনের ঘনিষ্ঠ কেউই ঠাঁই পাননি। সিনিয়র সহ-সভাপতি হয়েও এমন অবহেলা মেনে নিতে পারেননি মামুন ও তার অনুসারীরা। ফলে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে সার্বজনীন ছাত্র ঐক্য পরিষদ নামে একটি স্বতন্ত্র প্যানেল গঠন করেন মামুন। ওই প্যানেল থেকে ভিপি, জিএস, এজিএসসহ মোট ৭টি পদে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা প্রার্থী হন।
বিজ্ঞাপন
বিদ্রোহী এই প্যানেল ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল কঠোর অবস্থান নেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভিপি প্রার্থী সাইদ রেদোয়ান এবং দপ্তর সম্পাদক সাখাওয়াত হোসাইন কিছুদিন আগে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। তবে বাকি প্রার্থীরা নির্বাচনে থাকার সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন। এজন্য মামুনকে দায়ী করে ছাত্রদলের অন্যান্য গ্রুপগুলো। তাকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়।
আরও পড়ুন
তবে মামুনের বহিষ্কার মেনে নিতে পারছেন না ছাত্রদলের অনেক নেতাকর্মী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রদল কর্মী বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে জেল-জুলুম, রিমান্ড সহ্য করেও ছাত্রদলে সক্রিয় ছিলেন মামুন। অতীতেও তাকে দলীয় পদ দিতে অবজ্ঞা করা হয়েছে। চাকসু নির্বাচনে তার ত্যাগী কর্মীদেরও মূল্যায়ন করা হয়নি। তাই কিছু কর্মী স্বতন্ত্রভাবে প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা প্রত্যেকের গণতান্ত্রিক অধিকার। এই অধিকার প্রয়োগ করায় একজন নিবেদিত কর্মীকে বহিষ্কার করা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।
বহিষ্কার সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির ও শাখা সভাপতি আলাউদ্দিন মহসিনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা সাড়া দেননি।
একইভাবে, বহিষ্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে মামুনুর রশিদ মামুনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনিও সাড়া দেননি।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান এবং সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে চবি শাখা ছাত্রদলের পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে মোহাম্মদ আলাউদ্দিন মহসিনকে সভাপতি এবং আব্দুল্লাহ আল নোমানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এছাড়া মামুনুর রশিদ মামুনকে সিনিয়র সহ-সভাপতি, মো. ইয়াসিনকে সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং মো. সাজ্জাদ হোসেন হৃদয়কে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে মনোনীত করা হয়।
আতিকুর রহমান/এআরবি