রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে মার্কেটিং, পরিসংখ্যান ও পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।‌ উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শ্রেণিকক্ষ ভাঙচুর করে। এসময় আহত হন ৩ শিক্ষার্থী। একজন শিক্ষার্থীর মাথায় গুরুতর জখম হলে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টায় ঘটনার সূত্রপাত হয়ে দফায় দফায় স্লোগান দিয়ে এগোতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। পরে রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ ক্ষিপ্ত হয়ে পরিসংখ্যান ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শ্রেণিকক্ষ ভাঙচুর করেন।

আহত তিন শিক্ষার্থীরা হলেন- পরিসংখ্যান বিভাগের ২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী জনি ও প্রান্ত এবং পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইউসুফ।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ফেরদৌস রহমান, রেজিস্ট্রার ড. হারুন অর রশীদ, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. ইলিয়াস প্রামাণিকসহ তিন বিভাগের শিক্ষকরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলেও শিক্ষার্থীরা লাঠিসোটা নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন।

জানা যায়, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থীদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত জেন-জি ফুটবল টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল খেলায় মার্কেটিং বিভাগের ১৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার অপুর সঙ্গে খেলা চলাকালে ধাক্কাধাক্কি হয়। সেই ঘটনার জেরে সোমবার (১৩ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা চকবাজারে রাত সাড়ে ৮টার দিকে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পরিসংখ্যান বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করে।

প্রত্যক্ষদর্শী পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তুহিন রানা বলেন, মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী রোহান, অপুর সঙ্গে পরিসংখ্যান ও পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের কিছু শিক্ষার্থীর মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে পরিসংখ্যান ও পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালায়। এতে পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী প্রান্ত আহত হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে তিন বিভাগের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।

বেরোবি প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমান বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আমরা তিন ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে আলোচনা করার পর সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

পরে রাত ১১টা নাগাদ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে আসেন বেরোবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী। তিনি বলেন, এই ঘটনার সঙ্গে যে বা যারা জড়িত রয়েছে, তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে শাস্তি দেওয়া হবে। তদন্ত কমিটি করা হবে। তিন দিনের মধ্যে তাদের দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে জড়িতদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে।

রিপন শাহরিয়ার/এমজে