বর্ণিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) হীরকজয়ন্তী (৬০ বছর পূর্তি) উদযাপন করেছে কর্তৃপক্ষ। দিনব্যাপী আনন্দ শোভাযাত্রা, কেক কাটা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিবসটি পালন করা হয়।

গতকাল মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সকালে আনন্দ শোভাযাত্রার মাধ্যমে প্রথম পর্ব শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মরণ চত্বর থেকে শুরু হয়ে কাটা পাহাড় সড়ক, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, কলা ঝুপড়ি প্রদক্ষিণ করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। পরে কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করা হয়।

দ্বিতীয় পর্বে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য একাডেমিক অধ্যাপক ড. শামীম উদ্দিন খান বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে দক্ষ শিক্ষক ও গবেষক রয়েছেন। তবে বাজেট সীমাবদ্ধতার কারণে উন্নয়ন কিছুটা ধীরগতিতে চলছে। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রযাত্রায় এলামনাইদেরও দায়িত্বশীল ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে আবাসিক হল নির্মাণসহ অবকাঠামো উন্নয়নে সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরি।

দায়িত্ব গ্রহণের পর আমরা ইতোমধ্যে বেশ কিছু সংস্কারমূলক উদ্যোগ হাতে নিয়েছি, যার সুফল আগামী ৪-৫ বছরের মধ্যে দৃশ্যমান হবে। বিশ্ববিদ্যালয়কে উন্নত ও যুগোপযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিশ্বমানের দক্ষতা অর্জন অপরিহার্য। এভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রকৃত অর্থে জাতির আলোকবর্তিকা হিসেবে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।

চাকসু ভিপি ইব্রাহিম হোসেন রনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় আজ এমন এক অবস্থানে পৌঁছেছে, যেখানে এক সময় যাত্রা শুরু হয়েছিল মাত্র ৪টি বিভাগ নিয়ে। বর্তমানে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৪টি। প্রতিষ্ঠার সময় প্রণীত মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি পূর্ণাঙ্গ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তোলার কথা ছিল। কিন্তু ৬০ বছর পেরিয়ে গেলেও সেই লক্ষ্য পূর্ণ বাস্তবায়ন হয়নি।

বর্তমানে আবাসিক হলগুলোতে মাত্র ৬ হাজার ৪০০ শিক্ষার্থীর থাকার ব্যবস্থা রয়েছে, অথচ হলের বাইরে প্রায় ২২ হাজার শিক্ষার্থীকে অবস্থান করতে হচ্ছে যাদের মধ্যে অনেকে নিরাপদ আবাসনের নিশ্চয়তা থেকেও বঞ্চিত। কঠিন সময়েও শিক্ষকরা তাদের নিষ্ঠা ও পরিশ্রমে বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। এখন নীতিনির্ধারণীদের দায়িত্ব এসে সেই বাস্তবতাগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করার সময় এসেছে। গবেষণা খাতে ভর্তুকি বৃদ্ধি আজ সময়ের দাবি।

আলোচনা সভার সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন। সভার সভাপতিত্ব করেন বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল-আমীন। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষক ও চাকসুর সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দ বক্তব্য দেন।

আতিকুর রহমান/এআরবি