ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসিতে জয়ধ্বনি সাংস্কৃতিক সংগঠন আয়োজিত ‘নবান্ন উৎসব’ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে টানা পাঁচ ঘণ্টা ধরে উচ্চস্বরে গান ও বাদ্যযন্ত্রের শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন রোকেয়া হল ও শামসুন নাহার হলের শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে শুরু হওয়া এই অনুষ্ঠান প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চলমান রয়েছে।

টানা উচ্চ শব্দে গান বাজানোর কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দুই হলের ছাত্রীরা।

এদিকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে দুই হলের ৫০-৬০ জন শিক্ষার্থী ঝাড়ু হাতে টিএসসির দিকে যান। সেখানে তারা সাউন্ড বক্সের শব্দ কমাতে অনুরোধ করলে আয়োজকদের একজন তাদেরকে শিবির ট্যাগ দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তারা।

এসময় শিক্ষার্থীরা জানান, গত কয়েকদিন ধরেই টিএসসি এলাকায় চলমান শব্দদূষণের কারণে হলে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে।

ঢাবি শিক্ষার্থী নাসরীন আক্তার বলেন, গত তিন দিন ধরে এমনভাবে উচ্চ সাউন্ডে গান বাজাচ্ছে রুমে থাকা দায় হয়ে গেছে। গতকাল রাত ১১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত পুরো শব্দ আমার রুম থেকে স্পষ্ট শোনা গেছে। পরীক্ষা থাকলে পড়াশোনা করা যায় না, মাথাব্যথাও হয়। ভেবেছিলাম ৫ আগস্টের পর অন্তত এ ধরনের পরিস্থিতি বদলাবে, কিন্তু এখনো একই অবস্থা।

শামসুন নাহার হলের শিক্ষার্থী নিয়ন মণি বলেন, প্রোগ্রামের সাউন্ড সহনীয় মাত্রায় আনার অনুরোধ করলে সমঝোতার এক পর্যায়ে আয়োজকদের একজন যিনি রোকেয়া হলের শিক্ষার্থী আমাদের ফাউল শিবির বলে ট্যাগিং করেন। একপর্যায়ে আমার বান্ধবী মমোর হাত পর্যন্ত চেপে ধরেন। প্রক্টর স্যার আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে পূর্বের বিজ্ঞপ্তি শনিবারের মধ্যে কার্যকর করা হবে।

সাদিয়া হোসেন ঐশি বলেন, জয়ধ্বনির প্রোগ্রাম কতটা নির্লজ্জ হলে আজকের দিনে মানুষ ট্রমায় ভুগছে, আর এরা রাত ১০টা পেরিয়ে গেলেও এখনো গানবাজনা চালিয়ে যাচ্ছে। বন্ধ করতে বললে উল্টো আমাদেরই শিবির বলা হচ্ছে।

শামসুন নাহার হল সংসদের জিএস সামিয়া মাসুদ মম বলেন, টিএসসিতে কনসার্টের সাউন্ড কমাতে অনুরোধ করায় আমাদেরকে ফাউল শিবির বলে ট্যাগ দিয়েছে। আমরা সমঝোতার কথা বলছি, আর তারা এসে উল্টো আমাদেরই ট্যাগিং করছে।

ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এবি জুবায়ের বলেন, টিএসসিতে উচ্চ শব্দে গান বাজানোর ফলে রোকেয়া ও শামসুন নাহার হলের শিক্ষার্থীরা সমস্যায় পড়ছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী টিএসসিতে সন্ধ্যার পর উচ্চস্বরে গান-বাজনা বন্ধ রাখার কথা।

উল্লেখ্য, রোকেয়া হল ও শামসুন্নাহার হলের নারী শিক্ষার্থীদের সমস্যা বিবেচনা করে গত ৮ ডিসেম্বর ক্যাম্পাসে উচ্চস্বরে স্পিকার, মাইক ও গাড়ির হর্ন বাজানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে বিজ্ঞপ্তি দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস।

এসএআর/এআরবি