শিক্ষক ও সাংবাদিকদের দলীয় লেজুড়বৃত্তি করা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং সাবেক রাষ্ট্রদূত অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী।

শনিবার (২৯ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় সাহিত্য-সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট কর্তৃক আয়োজিত ‘নির্বাচনী চ্যালেঞ্জে জাতীয় ঐক্য : সংস্কৃতিসেবীদের ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন।

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব  রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন– লেখক ও সমাজচিন্তক সৈয়দ তোশারফ আলী, ভাষাসৈনিক ড. মুহম্মদ সিদ্দীক, নাট্যব্যক্তিত্ব বাবুল আহমেদ, ছড়াকার আবু সালেহ, অতীশ দীপংকর ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান শামসুল আলম লিটন, কবি ও সাংবাদিক শামীমা চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

তিনি বলেন, ইতিহাসের নিকৃষ্ট স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়ে যে গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে জুলাইয়ের সে ঐক্যকে ধরে রাখাতে হবে। সেভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে একটি সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে গড়ে তুলতে হবে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হলে জুলাই আন্দোলন সফল হবে। রাজনৈতিক আন্দোলনের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক আন্দোলন সফল করতে হবে। সাংস্কৃতিক বিপ্লবের মধ্যদিয়েই আমরা কেবল আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছতে পারব। 

তিনি আরও বলেন, শিক্ষক ও সাংবাদিকদের দলীয় লেজুড়বৃত্তি করা উচিত নয়। শিক্ষকদের কাজ জ্ঞান বিতরণ করা। সাংবাদিকের কাজ নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশন। কেউ দলবাজি করেই শিক্ষক হোন বা পদে সমাসীন হোন। এটা লজ্জাজনক বিষয়। এতোগুলো সংস্কার কমিশন হলো একটা শিক্ষা কমিশন হলো না। ড. কুদরত-ই-খোদার শিক্ষা কমিশণ ভালো রিপোর্ট দিয়েছিন, তার একটি লাইনও বাস্তবায়িত হয়নি। পনেরো বছরের দুঃশাসনে শিক্ষাব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। 

বক্তব্যে সৈয়দ তোশারফ আলী বলেন, দীর্ঘদিন পার্লামেন্ট, নির্বাহী বিভাগ ও জুডিশিয়ারি সঠিকভাবে কাজ করতে পারেনি। প্রধান শক্তি হয়ে উঠেছে আমলা, আর্মি ও ধনিক-বনিক শ্রেণি, দলবাজির। এতসব সংকটের মধ্যে দেশটা একদিন সমৃদ্ধি নিয়ে বেরিয়ে আসবে। আঠারো কোটি মানুষের পরাজয় হতে পারে না। 

রেজাবুদ্দৌলা চৌধুরী বলেন, আমাদের সন্তানেরা জুলাই আন্দোলনের রক্তদানের প্রতিযোগিতায় নেমেছিল। সেই রক্তদানকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। আজ রাজনৈতিক আন্দোলনের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক আন্দোলন চলছে না। জাসাসের মাধ্যমে একটা সাংস্কৃতিক আন্দোলন শুরু হয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতা আমরা ধরে রাখতে পারিনি। আমাদের সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। সাংস্কৃতিক বিপ্লব সংঘটিত করতে হবে। সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের মাধ্যমে সংস্কৃতিকে ভুলুন্ঠিত করা হয়েছিল। সেজন্য সংস্কৃতিসেবীদের জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। 

ওএফএ/বিআরইউ