বেরোবি ছাত্রদলের কমিটি
‘১০ লাখ টাকা দিলেই তুমি সভাপতি’
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) শাখা ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটি ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে করা হয়েছে- এমন অভিযোগ তুলেছেন পদবঞ্চিত সভাপতি প্রার্থী ইমরান হোসেন। তার দাবি, কমিটিতে মনোনয়নের জন্য তার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা নেওয়ার পর আরও ১০ লাখ টাকা চাওয়া হয়। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে ইমরান হোসেন বলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দায়িত্বপ্রাপ্ত টিম লিডার সহ-সভাপতি এম এম মুসা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আদনান, তাইজুলসহ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাসির হোসেন ও আরও কয়েকজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি বেরোবি শাখা ছাত্রদলের কমিটি গঠনে সরাসরি আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করেছেন।
বিজ্ঞাপন
ইমরান অভিযোগ করে বলেন, কমিটির পদ নিশ্চিত করতে সহ-সভাপতি এম এম মুসা তার কাছে সরাসরি টাকা দাবি করেন এবং বলেন, ১০ লাখ টাকা দিলেই তুমি সভাপতি। এসময় ইমরান তাকে বলেন, আমি ব্যক্তিগত ও পারিবারিকভাবে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে রাজনীতি করি- অতএব অর্থ নিয়ে পদবাণিজ্যের প্রস্তাব আমি প্রত্যাখ্যান করি। কিন্তু মুসা আমাকে পুনরায় বোঝাতে থাকেন যে সভাপতি হলে নিয়োগ বাণিজ্য ও বিভিন্ন টেন্ডারের সুবিধা পাওয়া যাবে। এমনকি বর্তমান আহ্বায়কের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, লন্ড্রির দোকান থেকে শুরু করে ছোট-বড় বিভিন্ন টেন্ডারও এখন সে পাচ্ছে। মুসা আরও দাবি করেন, তার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া যাবে, বিনিময়ে তাকে সমর্থন দিতে হবে।
ইমরান বলেন, আমাদের কমিটি গঠনের জন্য তারা এখানে এসে থাকা-খাওয়ার খরচের কথা বলে আমাকে বোঝানো হয় যে নিজেদের টাকা খরচ করে আমাকে সভাপতি বানানো সম্ভব নয়। এসব কথায় আশ্বস্ত হয়ে আমি কোচিং ও প্রাইভেট পড়িয়ে উপার্জিত অর্থ থেকে দুই ধাপে ২ লাখ টাকা দেই। ইমরানের দাবি, এরপরও সন্তুষ্ট না হয়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনে প্রভাবশালী জামায়াতপন্থী ও আওয়ামীপন্থী কিছু ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তৈরি করে ২০ লাখ টাকার বেশি আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে তাদের পছন্দের ব্যক্তিদের কমিটিতে বসান।
বিজ্ঞাপন
ইমরান আরও অভিযোগ করে বলেন, এসব অনিয়ম, দুর্নীতি ও পদবাণিজ্যের বিরুদ্ধে মুখ খুলতেই বেরোবি ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক সদস্য এবং প্রতিষ্ঠাকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্নাকে বহিষ্কার করা হয়েছে- যা হাস্যকর, অগণতান্ত্রিক ও প্রতিহিংসামূলক সিদ্ধান্ত বলে তিনি উল্লেখ করেন। তার দাবি, মুন্না ছাত্রদলের জন্য কাজ করতে গিয়ে এক সময় ছাত্রত্ব হারান এবং দশ বছর পর তা ফিরে পান। অথচ যাদের কারণে তার ছাত্রত্ব আটকে গিয়েছিল, সেই বিতর্কিত ব্যক্তিদেরই এখন কমিটিতে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি এম এম মুসা বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কমিটিতে আমরা চলমান (রানিং) ছাত্রদেরই রেখেছি। আমার বিরুদ্ধে যে ২০ লাখ টাকার অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। কমিটিতে পদ না পাওয়ার ক্ষোভ থেকে এই ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হয়েছে। তিনি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, আমার বিরুদ্ধে ২০ লাখ তো দূরের কথা- ২০ টাকার লেনদেনেরও প্রমাণ দিতে পারলে আপনারা বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।
রিপন শাহরিয়ার/এআরবি