আগামী ৯ সেপ্টেম্বর থেকে সশরীরে শুধু স্নাতকোত্তরের চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। তবে সশরীরে স্নাতকের পরীক্ষা নিয়ে কোনো রূপরেখা না দেওয়ায় সমালোচনার ঝড় বইছে শিক্ষার্থীদের মাঝে।

করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হওয়ার পর দুদফা পরীক্ষা নেওয়া শুরু করেও আবার বন্ধ করে দিতে হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে। ১ম দফায় স্নাতক চূড়ান্ত সেমিস্টার ও স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা নেওয়া হয়।

রোববার (২৯ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সশরীরে শুধু স্নাতকোত্তর পরীক্ষা নেওয়া হবে। অর্থাৎ করোনায় এর আগে যারা একবার পরীক্ষা দিতে পেরেছে তাদেরই আবার পরীক্ষা নেওয়া হবে।

বাকিদের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয়। প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ফেসবুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ গ্রুপগুলোতে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থীরা।

সজীব বণিক নামে স্নাতক চূড়ান্ত বর্ষের এক শিক্ষার্থী ফেসবুকে লেখেন, দশম ব্যাচের (২০১৫-১৬ সেশন) ৩-৪টা বিভাগ (যারা) অনার্স কমপ্লিট করতে পারেনি। তারা অগ্রাধিকার পাওয়ার কথা থাকলেও বঞ্চিত। শিক্ষার্থীদের সময়ের কোনো দাম নেই। শিক্ষার্থীদের বের করার আগে যে মানসিক যন্ত্রণাটা দেওয়া হয় তা বলাবাহুল্য। এত সময় নষ্ট হওয়ার পরও যদি এমন বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয় তাহলে শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ভাবা জরুরি।

চাকরির বাজারে স্নাতকোত্তর হলো প্রমোশনের বিষয়, আর স্নাতক যোগ্যতার বিষয় দাবি করে মনিম হাসান নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, এই যোগ্যতা (স্নাতকের সনদ) প্রমাণের জন্য যারা বছর ২-১ ধরে বসে আছে তাদের ছাড় না দিয়ে প্রমোশনের জন্য যা দরকার তাদের ছাড় দিলেন। আমি এই ছাড় দেওয়ার বিরোধিতা করছি না বরং তাদের সঙ্গে যোগ্যতা প্রমাণকারীদের সুযোগ না দেওয়াটাকে অপরাধ মনে করছি।

মোশাররফ হোসাইন নামে আরেক শিক্ষার্থী লিখেন, গত জানুয়ারি মাসে যাদের ফাইনাল পরীক্ষা (করোনাকালীন ১ম দফা) হলো। এখন আবার তাদের মাস্টার্স পরীক্ষা হবে। তাহলে জুনিয়র ও সিনিয়র কয়টা সেমিস্টার ফারাক হচ্ছে?

করোনায় যারা একবার পরীক্ষা দিয়েছে (১ম ও ২য় দফায়), আবারও তারাই পরীক্ষা দেবে। এক্ষেত্রে বাকিদের প্রতি এটা বৈষম্য হচ্ছে কি না? এমন প্রশ্নে পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম আকন্দ বলেন, একাডেমিক কাউন্সিলের (শিক্ষা পরিষদ) নির্দেশনার আলোকে পরীক্ষা কমিটি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখানে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারব না।

একই প্রশ্নে শিক্ষা পরিষদের সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আসাদুজ্জামান বলেন, এ ব্যাপারে আমার মন্তব্য করা সমীচীন নয়। আপনি ভাইস চ্যান্সেলরকে জিজ্ঞেস করেন।

শিক্ষা পরিষদের সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরীকে মুঠোফোনে বলেন, সুযোগ পেলে আমরা মাস্টার্সের পরই প্রক্রিয়া (স্নাতক পরীক্ষার বিষয়ে) করে ফেলব।

এমএসআর