বর্তমানে পরিস্থিতির চাপে এবং বিভিন্ন কারণে গণমাধ্যম অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। পাশাপাশি করোনাকালে নানা কারণে অর্থনৈতিক চাহিদা পূরণ না হওয়ায় অনেকে সাংবাদিকতা পেশা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। এ অবস্থায় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কি কি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত এবং দেশের গণমাধ্যমের ভবিষ্যৎ কেমন হবে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে এক গোলটেবিল বৈঠকে।

শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে প্রেনিউর ল্যাব ইয়ুথ অ্যান্ড ইনোভেশন ট্রাস্ট এবং ফ্রিডরিখ নওমান ফাউন্ডেশন ফর ফ্রিডম বাংলাদেশের (এফএনএফ বাংলাদেশ) আয়োজনে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে বক্তারা বলেন, করোনার সময়ে অনেক সাংবাদিকের বেতন-ভাতা ঠিকমতো পরিশোধ করা হয়নি। সংসার চালাতে এসব সাংবাদিক বাধ্য হয়ে অন্য পেশায় যুক্ত হচ্ছেন। পাশাপাশি মফস্বলে যারা সাংবাদিকতা করেন, তারা ন্যূনতম বেতন-ভাতা পান না। এসব পরিস্থিতি দেখে তরুণরা এ পেশায় আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও আসতে ভয় পাচ্ছেন। তবে নতুন পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে যদি দেশের গণমাধ্যমগুলো খাপ খাইয়ে নিতে পারে, তাহলে সাংবাদিকতা এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে বলে মনে করছেন বক্তারা।

গোলটেবিল বৈঠকে কলোরাডো বোল্ডার বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক মুশফিক ওয়াদুদ বলেন, আমরা অনেকেই মনে করি সাংবাদিকতা খাত দিন দিন মরে যাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে এ সেক্টরটি অন্য সব সেক্টরের মতো বদলে যাচ্ছে যেমন ব্যাংকিং সেক্টর এবং অন্যান্য সেক্টর বদলে যাচ্ছে। যদি সাংবাদিকতা এ পরিবর্তনগুলোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে তাহলে সাংবাদিকতা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে।

এএফপির ব্যুরো প্রধান শফিকুল আলম বলেন, ইন্টারনেটের কারণে ছাপা মাধ্যমের প্রচলন অনেকটা কমে গেছে। তারপরও আমরা দেশে কোনো মানসম্মত ওয়েব মিডিয়া তৈরি করতে পারিনি। সবাই যে বলছে দেশে সাংবাদিকতা দিন দিন মরে যাচ্ছে, সেখান থেকে সেটাকে রক্ষার জন্য এ খাতের আরও বেশি দেখাশোনা করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।

সাংবাদিক নাজমুল আহসান বলেন, আমাদের দেশে স্বল্প সংখ্যক সংবাদপত্র আছে, যা আসলে লাভজনক। তাহলে নতুন সংবাদপত্র এত ঘন ঘন চালু হচ্ছে কেন? পশ্চিমা দেশগুলোতে লোকেরা স্থানীয় সংবাদপত্রগুলোকে স্বাগত জানায়, যা আমাদের দেশে দেখা যায় না। সুতরাং আমাদের দেশের পরিস্থিতি অনুযায়ী আমাদের সমাধান ভিন্ন হওয়া উচিত।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যৈষ্ঠ প্রভাষক সাইমুম রেজা তালুকদারের সঞ্চালনায় গোলটেবিল বৈঠকে অন্যদের মধ্যে ডেইলি আওয়ার টাইমের নির্বাহী সম্পাদক তাসমিয়া নুহিয়া আল আমিন, ইংরেজি দৈনিক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডসের জাহিদুল ইসলাম, টেক্সাস টেক ইউনিভার্সিটির টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট মেহেদী হাসান, ডেইলি স্টারের আরাফাত রাহমান, দৈনিক মানবজমিনের শাহাদাত স্বাধীনসহ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এমটি/এসএসএইচ