মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান নগদের অ্যাকাউন্ট ও টাকা ফেরত দেওয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। 

সোমবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে তারা এ সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় ১৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব গ্রাহকের টাকা ফেরত না দিলে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর নগদ অফিস ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা। 

সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টেলিভিশন ফিল্মস অ্যান্ড ফটোসেশান বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিব হাসান সরকার।

লিখিত বক্তব্যে রাকিব বলেন, নগদ বাংলাদেশের একটি সদ্য প্রতিষ্ঠিত ডিজিটাল আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থা যা ইতোপূর্বে থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস নামে পরিচিত ছিল। পরে নাম পালটে নগদ নামকরণ করা হয়। সঙ্গে যুক্ত করা হয় বাংলাদেশ ডাক বিভাগের নাম। সরকারি বিভাগের নাম ব্যবহার করে এবং উসকানিমূলক বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে মূলত নগদ জনগনের বিশ্বাস অর্জন করে। এরপর শুরু হয় বিভিন্ন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নগদের সম্মিলিত ব্যবসা কার্যক্রম।

তিনি বলেন, বিভিন্ন প্ররোচনামূলক ছাড় দিয়ে জনগণকে লোভ দেখিয়ে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো সম্মিলিতভাবে প্রতারণার ফাঁদ পাতে। এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ইভ্যালি, আলাদীনের প্রদীপ, সিরাজগঞ্জ শপ, বগুড়া শপ ইত্যাদি। প্রথমত এব ই-কমার্সে সাইটে পেমেন্ট নগদের মাধ্যমে করলে তারা ১৫-২৫ শতাংশ অতিরিক্ত ছাড় দিত। 

এরইমধ্যে সরকার ই-কমার্সের নতুন নীতিমালা কার্যকর করায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো বিপাকে পড়ে এবং পণ্য সরবরাহ করতে বিলম্ব শুরু করে। এমতাবস্থায় গ্রাহকদের চাপের মুখে সাইটগুলো নির্দিষ্ট সময়ে পণ্য সরবরাহ করতে ব্যর্থ হওয়ায় পেমেন্টকৃত টাকা ফেরত দিতে শুরু করে। যেহেতু নগদের মাধ্যমেই অধিকাংশ টাকা পেমেন্ট করা হয়েছিল; ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো নগদের মাধ্যমেই রিফান্ড করা শুরু করে৷

এক পর্যায়ে গত ২ সেপ্টেম্বর ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের গ্রাহকদের না জানিয়েই হঠাৎ করে পেমেন্টকৃত অর্থ গ্রাহকদের নগদ অ্যাকাউন্টে ফেরত দেয়। গ্রাহকরা পুরো ঘটনা বুঝে উঠার আগেই, একই দিনে নগদ প্রায় সব গ্রাহকের নগদ অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়। 

এরপর নগদ ভিন্ন ভিন্ন কারণ দেখিয়ে গ্রাহকদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে নগদ জানায় যে, এসব অ্যাকাউন্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। কতদিনে এ সমস্যার সমাধান হবে, তা জানানো হয় না। এ থেকে একটি বিষয় খুব পরিষ্কার যে, পুরোটাই নগদের স্বেচ্ছাচারিতা ও জনগণের টাকা আটকে রাখার অসাধু পরিকল্পনা মাত্র।

টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে রাকিব বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে সব ভুক্তভোগী গ্রাহককে একত্রিত করা হয়েছে। গ্রাহক হয়রানি বন্ধের জন্য নগদকে ২৪ ঘণ্টা সময় দেওয়া হচ্ছে। ১৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব গ্রাহকের টাকা ফেরত না দিলে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর নগদ অফিস ঘেরাও করা হবে, রাজপথে আন্দোলন হবে। ভুক্তভোগীদের টাকা উদ্ধার হওয়ার আগ পর্যন্ত দেশব্যাপী আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

এইচআর/আরএইচ