অন্তত এক ডোজ টিকা নেওয়ার শর্তে ৫ অক্টোবর থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আবাসিক হল খোলার সুপারিশ করেছে প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটি। যার পক্ষে মত দিয়েছে একাডেমিক কাউন্সিলও। তবে এ সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে হল খোলার দাবি জানিয়েছেন ঢাবি ছাত্রলীগ।

বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া পৃথক স্ট্যাটাসে ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস এবং সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন এ দাবি জানিয়েছেন। পরে ঢাকা পোস্টের সঙ্গে আলাপকালেও তারা দাবিগুলো সম্পর্কে জানান।

সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে হল খোলার দাবি জানিয়ে সনজিত চন্দ্র দাস লেখেন, ৫ অক্টোবর নয়, সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে হল খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক। তাহলে শিক্ষার্থীদের অক্টোবরের আবাসন বাবদ বাড়তি ভাড়া গুনতে হবে না। আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়ার বিষয়ে, প্রশাসনের উচিত শিক্ষার্থীবান্ধব সিদ্ধান্ত নেওয়া। 
তিনি আরও লেখেন, আমরা ঢাবি ছাত্রলীগ, পরিবেশ পরিষদের মিটিংয়েও এই দাবি করেছি। আবারও বলছি সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে ছিনিমিনি খেলা বাদ দেন! ঢাবি ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের সব দাবি আদায়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।

সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়ে সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন লেখেন, ৫ অক্টোবর হল খোলার সিদ্ধান্ত সুবিবেচনাপ্রসূত নয়। ২৭ সেপ্টেম্বরের পর হল খোলার সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নিজস্ব বিষয় এবং বাসা ভাড়াসহ শিক্ষার্থীদের সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে হল খোলাই অভিভাবকসুলভ হত। পরিবেশ পরিষদে ছাত্র সংগঠনগুলোর মতামত অযৌক্তিকভাবে অগ্রাহ্য করা হয়েছে। সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে হল খোলার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ অনতিবিলম্বে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানাচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে সনজিত চন্দ্র দাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হোক এমন কোনো সিদ্ধান্ত প্রশাসন নিলে সেটা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ প্রত্যাখ্যান করবে। আমরা বলেছি সেপ্টেম্বরের মধ্যে হল খুলে দিতে হবে। অন্যথায় কোনো ধরনের আন্দোলন সংগ্রাম হলে সেটার দায় দায়িত্ব আমরা নেব না।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের যেন অক্টোবর মাসের ভাড়া না লাগে সেটা চিন্তা করে অন্তত ৩০ সেপ্টেম্বর হোক কিংবা পহেলা অক্টোবর হল খুলে দিতে হবে। আমরা পরিবেশ পরিষদের সভায় দাবি জানিয়েছি যেন সেপ্টেম্বরের মধ্যে হল খোলা হয়। আমরা এখনো সেই দাবি জানাচ্ছি। এর ব্যত্যয় ঘটলে প্রয়োজনে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে যাব।

সাদ্দাম হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, অক্টোবরের ৫ তারিখে ঢাবির হল খোলার সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই সুবিবেচনাপ্রসূত নয়। আমরা প্রত্যাশা করি, সিন্ডিকেট মিটিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে এবং হলগুলো উন্মুক্ত করবে।

আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষকে এ দাবি জানাবেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমরা ধারাবাহিকভাবে এটা জানাচ্ছি। আমরা পরিবেশ পরিষদের মিটিংয়ে জানিয়েছি, উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে জানিয়েছি এবং আজকেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবহিত করেছি। বলেছি, যে সিদ্ধান্ত তারা গ্রহণ করেছে এটি অভিভাবক সুলভ নয়। শিক্ষার্থীদের স্বার্থ বিবেচনা করে সেপ্টেম্বরের মধ্যে অবশ্যই হলগুলো খুলে দিতে হবে।

এইচআর/এমএইচএস