রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪ শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত করার দাবিতে আমরণ অনশন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চাকরিচ্যুত না করা পর্যন্ত এই অনশন চলবে বলেও জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। 

এদিকে এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌস হিমেলকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। 

বুধবার  (২৯ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ছাড়াও অন্যান্য বিভাগের আরও কিছু শিক্ষার্থী আমরণ অনশন কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও তদন্ত কমিটির প্রধান লায়লা ফেরদৌস হিমেল ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাকিব ও ইয়াসিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা ওই শিক্ষককে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবিতে আমরণ অনশন করছি। তাকে এই রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় থেকে না সরানো পর্যন্ত অনশন চলবে। 

তারা আরও জানান, অনশনরত অবস্থায় এরই মধ্যে চার শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এরা হলেন- সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী হাবিব, জাহিদ, সিরাত ও জাকারিয়া। এদের মধ্যে হাবিবকে ইতোমধ্যেই শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যাদেরও চিকিৎসা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও তদন্ত কমিটির প্রধান লায়লা ফেরদৌস হিমেল ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাত ৮টার দিকে আমাকে প্রধান করে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটিকে যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। 

আনুমানিক কবে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করবো তিনদিনের মধ্যেই এর প্রতিবেদন জমা দিতে। তবে সেটা যদি সম্ভব নাও হয় তাহলে যতটা দ্রুত সময়ে প্রতিবেদনটি জমা দেওয়া যায় সেই চেষ্টা করব। 

গোপনীয়তার কারণে তদন্ত কমিটিতে থাকা অন্য সদস্যদের পরিচয় প্রকাশ করা হচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা চাইছি এর সঠিক তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে। তাই তদন্তের স্বার্থে বাকিদের পরিচয় গোপন রাখা হচ্ছে। 

তদন্তে ঘটনার সত্যতা মিললে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অভিযোগটি গুরুতর। এমন ঘটনা মধ্যযুগে হতো। যদি মধ্যযুগীয় সেই ঘটনাই এখানে ঘটে থাকে তাহলে অবশ্যই তার (শিক্ষক) বিরুদ্ধে সেই অনুযায়ীই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রেজারার আব্দুল লতিফের সঙ্গে কথা বলার জন্য তার মুঠোফোনে কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। 

শুভ কুমার ঘোষ/আরএআর