ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু হয়েছে ২ অক্টোবর। তবে ছাত্রাবাস না খুলে পরীক্ষা নেওয়ায় থাকার জায়গা নিয়ে বেশ বিপাকে পড়েছে এসব প্রতিষ্ঠানের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। এছাড়া আগামী ৪ অক্টোবর (সোমবার) থেকে সাত কলেজের স্নাতক তৃতীয় বর্ষ ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষাও শুরু হতে যাচ্ছে।

এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা বলছে, ছাত্রাবাস না খুলে পরীক্ষা নেওয়ার কারণে মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শিক্ষার্থীরা থাকার জায়গা নিয়ে সমস্যায় পড়েছে। করোনায় আয় কমে যাওয়ায় অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবকই সংকটে রয়েছে। ঢাকায় নতুন করে বাসা ভাড়া নেওয়া, অগ্রিম এক মাসের ভাড়া পরিশোধ, সার্ভিস চার্জসহ আনুষঙ্গিক খরচ দেওয়া অধিকাংশ শিক্ষার্থীর পক্ষেই কষ্টসাধ্য। বেশি বিপাকে পড়েছে ঢাকা কলেজ ও ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় এ দুটি প্রতিষ্ঠানে ১ম বর্ষ ও তৃতীয় বর্ষে আবাসিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি।

তবে গত ১৯ সেপ্টেম্বর (রোববার) থেকে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের আবাসিক ছাত্রাবাস খুলে দেওয়া হয়েছে। এ মুহূর্তে দ্বাদশ শ্রেণির ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পাশাপাশি, স্নাতক ১ম বর্ষ ২০১৯-২০ ও স্নাতক ৩য় বর্ষ ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা ছাত্রাবাসে উঠতে পারছে। অবশ্য ছাত্রাবাসে অবস্থান করার জন্য শিক্ষার্থীদের করোনা নেগেটিভ টেস্টের সনদ সঙ্গে নিয়ে আসতে হচ্ছে। তাই অন্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদেরও দাবি অন্তত পরীক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে ছাত্রাবাসে অবস্থানের সুযোগ দেওয়া হোক।

ছাত্রাবাস না খোলায় ভোগান্তির কথা জানিয়ে ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী তাসফিয়া পান্না বলেন, পরীক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে মানবিক সিদ্ধান্ত প্রশাসনের গ্রহণ করা উচিত ছিল। এখন এই অল্প কয়েকদিন আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। তবে অনেকেরই ঢাকায় আত্মীয়-স্বজন নেই। তাদের বাধ্য হয়েই অল্প কয়েকদিনের জন্য সার্ভিস চার্জ, অগ্রিম বাসা ভাড়া দিয়ে মেসে উঠতে হচ্ছে।

নাফিসা জাহান নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আর্থিক দৈন্যদশা থাকার পরও ঢাকায় এসে মেসে উঠতে বাধ্য হয়েছি। অন্তত আশা করেছিলাম পরীক্ষার্থীদের জন্য ছাত্রাবাসে অবস্থানের সুযোগ মিলবে। কিন্তু সেটি আর হলো না।

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ফরহাদ হোসেন বলেন, পরীক্ষা শুরুর আর এক দিন বাকি আছে এখনও থাকার জায়গা ঠিক করতে পারিনি। বন্ধুর সঙ্গে তার মেসে অবস্থান করছি। ঢাকায় মেস ভাড়া করে থাকার সামর্থ্যও আমার নেই৷ কোথায় থেকে পরীক্ষা দেব ভেবে পাচ্ছি না৷ আমাদের ছাত্রাবাস যদি পরীক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়  অনেক উপকার হয়।

পরীক্ষার্থীদের থাকার বিবেচনায় হল খুলে দেওয়া হবে কি না জানতে ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভট্টাচার্যকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

তবে অক্টোবর মাসের মধ্যেই ছাত্রাবাস খোলার ব্যাপারে আশাবাদী ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আইকে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার। তিনি বলেন, ছাত্রাবাস খোলার জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। সংস্কার কাজ চলছে। আশা করি সংস্কার কাজ শিগগিরই শেষ হবে। অক্টোবর মাসের মধ্যেই স্নাতক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য ছাত্রাবাস খুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

আরএইচটি/এসএসএইচ