করোনা মহামারির ভয়াবহতা কাটিয়ে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে এবার ২০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা গুচ্ছ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে আবেদন প্রক্রিয়াও। এ ভর্তি পরীক্ষায় সম্ভাব্য ২২ হাজার আসনের বিপরীতে আবেদন জমা পড়েছে ২ লাখ ৩২ হাজার ৪৫৫ জন পরীক্ষার্থীর। এর মধ্যে ‘এ’ ইউনিটে ১ লাখ ৩১ হাজার ৯০১ জন, ‘বি’ ইউনিটে ৬৭ হাজার ১১৭ জন ও ‘সি’ ইউনিটের জন্য ৩৩ হাজার ৪৩৭ জন পরীক্ষার্থী আবেদন করেছেন।  

বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের হল রুমে গুচ্ছভুক্ত ২০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

এতে লিখিত বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের অধ্যাপক ড. রশিদুন নবী জানান, গুচ্ছ পদ্ধতির এই ভর্তি পরীক্ষায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এই ২০টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করবে। এজন্য একযোগে মোট ২৮টি কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ভর্তি পরীক্ষাগুলো ধারাবাহিকভাবে অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি আরও জানান, ‘এ’ ইউনিটের (বিজ্ঞান) ভর্তি পরীক্ষা আগামী ১৭ অক্টোবর, ‘বি’ ইউনিটের (মানবিক) ভর্তি পরীক্ষা ২৪ অক্টোবর, ‘সি’ ইউনিটের (বাণিজ্য) ভর্তি পরীক্ষা আগামী ১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। সবগুলো ইউনিটের পরীক্ষাই হবে দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত।

অধ্যাপক ড. রশিদুন নবী বলেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছভুক্ত ভর্তি পরীক্ষার অন্যতম একটি কেন্দ্র। কলাভবন, বিজ্ঞান ভবন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ভবন ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের মোট ১২৩টি কক্ষে ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ৭ হাজার ৬৮৮ জন, ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ৬ হাজার ৪৯৭ জন এবং ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ১ হাজার ৩৫৪ জন অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ড. এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা আমাদের এবারই প্রথম। ভর্তি পরীক্ষার সময় ভর্তিচ্ছুদের হয়রানি লাঘব করার জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতির অভিপ্রায়ে এ কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীদের একটি মেধা তালিকা প্রকাশ করা হবে। এরপর মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দমত তালিকাভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন। অন্যদিকে প্রত্যেক  বিশ্ববিদ্যালয় তাদের আসন সংখ্যার সামর্থের ওপর ভিত্তি করে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করবে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩টি বিভাগে কোটাসহ সম্ভাব্য সর্বোচ্চ আসন সংখ্যা হতে পারে ১২৪৪টি। এর মধ্যে বিভিন্ন কোটা হতে ১৩৪ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। 

এ সময় রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর, টেকনিক্যাল উপ-কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. সুজন আলী এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) আবদুল হালিমসহ উপস্থিত ছিলেন।

উবায়দুল হক/আরএআর