সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের স্থায়ী বহিষ্কার চেয়ে দ্বিতীয় দফায় আবারও আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার বিকেল ৪টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও তদন্ত কমিটির প্রধানসহ ৩৩ জন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। 

বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন তদন্ত কমিটির প্রধান ও রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌস হিমেল এবং আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থী আবু জাফর হোসাইন। 

আবু জাফর হোসাইন ঢাকা পোস্টকে বলেন, শিক্ষার্থীরা বিকেল ৪টার দিকে অনশন ভাঙলেও আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনে তালা দিয়ে ভেতরে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রেখেছে। তবে এই আন্দোলন স্থগিত করার কোনো সম্ভাবনা নেই বলেও জানান তিনি। 

তদন্ত কমিটির প্রধান ও রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌস হিমেল ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারসহ আমরা ৩৩ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা বিকেল ৪টা থেকে একাডেমিক ভবনে অবরুদ্ধ হয়ে আছি। আমরা শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করলেও তারা বুঝছে না। 

তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে লায়লা ফেরদৌস হিমেল বলেন, যেহেতু সিন্ডিকেট সভায় সদস্যরা তদন্ত প্রতিবেদন খুলেছেন এবং আমার জানা মতে এই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তাই এখন এ বিষয়ে বলার অবকাশ নেই। তবে তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে গণমাধ্যমকে কেউ কিছু বলেনি।

একটি বিশ্বস্ত সূত্র ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছে, শুক্রবার বিকেলে ঢাকায় সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হলেও সেখানে কোনো সিন্ডিকেট সদস্যকে তদন্ত প্রতিবেদনের কপি সরবরাহ করা হয়নি। সেক্ষেত্রে তদন্তে আসা কোনো তথ্য অফিসিয়ালি কোথাও সরবরাহ করা হয়নি।

উল্লেখ্য, অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের স্থায়ী বহিষ্কার চেয়ে আন্দোলন থেকে বক্তব্য দেওয়ার সময় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রকাশ্যে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন শামীম হাসান (২৪) নামে এক শিক্ষার্থী। পরবর্তীতে তাকে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।  

শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) রাকিব হাসনাত ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষপান করা শিক্ষার্থী শামীম হাসানকে এখনও পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তবে সে শঙ্কামুক্ত আছে। 

এর আগে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিনের স্থায়ী বহিষ্কার চেয়ে শুক্রবার (২২ অক্টোবর) রাত ৮টা থেকে দ্বিতীয় দফায় আবারও আন্দোলন ও আমরণ অনশনে নামেন শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার বিকেলে অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিষয়ে সিন্ডিকেট সভায় কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় দ্বিতীয় দফায় আবারও অনশনের মধ্যদিয়ে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

শুভ কুমার ঘোষ/এসপি