প্রকৃতির প্রাণসঞ্চার করা বিভিন্ন প্রজাতির পাখি আজ বিলুপ্তির পথে। তাই পাখিদের নিরাপদ আবাসন ও খাদ্য নিশ্চিতের লক্ষ্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের নবীন কয়েকজন শিক্ষার্থী মিলে গড়েছেন নতুন সংগঠন ‘অভয়ারণ্য’। তারা সবাই পাখিপ্রেমিক। পাখির প্রতি তাদের ভালোবাসা অপরিসীম। প্রকৃতির দৃষ্টিনন্দন বিভিন্ন পাখির নিরাপদ আবাসস্থল গড়ে তোলাই তাদের উদ্দেশ্য।

ক্যাম্পাসের পাখিদের নিরাপদ বসস্থান নিশ্চিত করতে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় নীড় বাঁধার জন্য ৬০টি কলস গাছে গাছে ঝুলিয়ে দিয়েছে প্রকৃতিপ্রেমিক শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল ভবনের অফিসের পাশের জায়গায় গাছগুলোতে বেশিসংখ্যক মাটির কলস বেঁধে দিয়েছেন, যাতে সেখানে পাখির অভয়ারণ্যে পরিণত হয়। তারা জায়গাটির নামকরণ করেছে ‘পাখি চত্বর’।

এছাড়া নিরাপদ আশ্রয়ের পাশাপাশি পখিদের খাদ্য নিশ্চিত করতে খাদ্য সরবরাহ করেছে সংগঠনটি। পাখির খাদ্য হিসেবে বাজার থেকে খাবার সংগ্রহ করে তা পাত্রে করে গাছে বেঁধে দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের বোতল সংগ্রহ করে পাখিদের খাদ্যের পাত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে।

অভয়ারণ্য সংগঠনের সদস্যরা নিজেদের টাকা দিয়েই পাখিদের বাসা বাঁধার জন্য কলস ও খাদ্য সরবরাহ করেছে। এছাড়া প্রকৌশল ভবনের পাশের অপরিষ্কার জায়গাটাকে নিজ উদ্যোগে পরিছন্ন করেছেন তারা। গাছে বাঁধা কলসে পাখিরা নিরাপদে বসবাস এবং বংশবিস্তার করবে এবং গুঁড়াখাদ্য খেয়ে ক্ষুদা নিবারণ করবে এটাই তাদের প্রত্যাশা।

সংগঠনটির সদস্য ইমন হোসেন বলেন, শীতের আগামনী বার্তায় ক্যাম্পাসে অতিথি পাখি আসতে শুরু করেছে। এ অতিথি পাখিরাও বাসা বাঁধতে পারবে। সংগঠনের এ কাজ দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত হবে। পাখিদের নিয়ে এ কাজ শিক্ষার্থীসহ সবাইকে পশুপাখিদের প্রতি একটি ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তুলতে সাহায্য করবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহজাহান মন্ডল বলেন, পাখিরা তো আমাদের প্রকৃতির অংশ। তারা যে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করে তা মানুষের জন্য প্রয়োজন। আর পাখিদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের একটা মেলবন্ধন তৈরি হচ্ছে। এটি অব্যাহত থাকুক।

রাকিব হোসেন/এমএসআর