দুই শিক্ষার্থীর অনশন ভাঙালেন খুবির উপাচার্য প্রফেসর ড. ফায়েক উজ্জামান

অবশেষে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে অনশনরত খুলনা বিশ্ববিদ্যলয়ের (খুবি) দুই শিক্ষার্থীর অনশন ভাঙালেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান। অনশন বসা দুই শিক্ষার্থী হলেন— ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের ইমামুম ইসলাম সোহান (১৭ ব্যাচ) ও বাংলা ডিসিপ্লিনের মোবারক হোসেন নোমান।

মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে শরবত পান করিয়ে তাদের অনশন ভাঙালেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। এরপর রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফুলের মালা গলায় দিয়ে অনশনস্থান ‌ত্যাগ করেন ওই দুই শিক্ষার্থী।

মোবারক হোসেন নোমান বলেন, উপাচার্য স্যার আমাদের সর্বোচ্চ অভিভাবক। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। এ জন্য আমরা অনশন থেকে সরে এসেছি। আমাদের পাশে যারা ছিলেন তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।

উপাচার্য বলেন, আমরা শুধু শিক্ষকই নয় মা-বাবাও বটে। শিক্ষার্থীরা যদি ভালো না থাকে আমরাও ভালো থাকতে পারি না। শিক্ষার্থীরা তাদের ভুল বুঝতে পেরে আবেদন করেছে, দুঃখ প্রকাশ করেছে। আমরা খুব শিগগির শৃঙ্খলা কমিটির মিটিং ডেকে বিষয়টির সুরহা করব। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যায়ের সব শিক্ষক, কর্মকর্তা, ছাত্রবিষয়ক পরিচালক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাইকে ধন্যবাদ জানাই।

এর আগে দুঃখ প্রকাশ করে উপাচার্য বরাবর ওই দুই শিক্ষার্থী আবেদন করায় উপাচার্য ড. ফায়েক উজ্জামান অনশন ভাঙিয়ে দুই শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করার আশ্বাস দেন।

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে ১৭ জানুয়ারি রাত থেকে খুবির প্রশাসনিক ভবনের সামনে তারা আমরণ অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। অনশনের ৯ দিনের মাথায় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে খুবি উপাচার্য তাদের অনশন ভাঙালেন।

মঙ্গলবার করা আবেদনপত্রে দুই শিক্ষার্থী উল্লেখ করেছেন, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঁচ দফা আন্দোলন চলার সময় আমাদের অবস্থান স্থলে দু’জন শিক্ষকের গাড়ি চালিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ওই ঘটনায় দু’জন শিক্ষকের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে কিন্তু সেই ঘটনার সঙ্গে আমার সংশ্লিষ্টতা নেই। আমার অজ্ঞাতে হলেও শিক্ষক যদি কোনো কষ্ট পেয়ে থাকেন তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করছি।’

আবেদনপত্রে সার্বিক ঘটনা বিবেচনা করে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তারা।

২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর শিক্ষার্থীরা ৫ দফা দাবি সংক্রান্ত স্মারকলিপি ছাত্রবিষয়ক পরিচালকের মাধ্যমে উপাচার্যের কাছে পেশ করেন। তাতেও কোনো সমাধান না পেয়ে গেল বছরের ১ জানুয়ারি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। কিছুদিন পর আন্দোলন চলাকালে দুজন শিক্ষকের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে খুবি প্রশাসন শিক্ষার্থীদের বক্তব্য জানতে চায়।

এরপর তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন শেষে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের সঙ্গে অসদাচারণসহ বিভিন্ন অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ড ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ইমামুল ইসলামকে ১ বছরের জন্য এবং বাংলা ডিসিপ্লিনের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী মোবারক হোসেন নোমানকে ১ বছরের জন্য শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করে।

এমএসআর