রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ফেডারেশন আয়োজিত ‘লাশের মিছিল’ কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রশাসনের বিরুদ্ধে। বুধবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুজ্জোহা চত্বর থেকে মিছিল শুরু হওয়ার কথা থাকলেও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের বাধার কারণে কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়।

ছাত্র ফেডারেশনের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুজ্জোহা চত্বরে সাদা কাফনের কাপড় পড়ে একত্র হতে থাকে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। কিছুক্ষণের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বিতর্কিত প্ল্যাকার্ড ব্যবহারের কথা বলে মিছিল শুরু হওয়ার আগ মুহূর্তে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা এসে মিছিলে বাধা দেয়।

এ সময় তারা সংগঠনটির বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা মহব্বত হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রক্টরের কার্যালয়ে নিয়ে যান। সেখানে ২ ঘণ্টার বেশি সময় আটকে রেখে মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ করেন মোহাব্বত হোসেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাব্বত হোসেন মিলন এ সময় বক্তব্য দিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি ঢাকায় পরপর দুটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটল, দুজন শিক্ষার্থী সড়কে এক্সিডেন্ট করেছে। আমরা মনে করি এগুলো কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড। 

এরপরই প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা উপস্থিত আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। আন্দোলনকারীদের কাছ থেকে প্ল্যাকার্ড ছিনিয়ে নেন। একপর্যায়ে মোহাব্বত হোসেন মিলনকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়।

আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, “এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহকারী প্রক্টর পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন যুবককে লক্ষ্য করে বলেন, ‘কী কর তোমরা? এদের মেরে শোয়ায়ে দাও।’ তবে পাশে দাঁড়িয়ে থাকা যুবকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে জানা যাচ্ছে।”

জানতে চাইলে ছাত্র ফেডারেশনের নেতা মহব্বত হোসেন বলেন, আমরা ইচ্ছাকৃতভাবে প্ল্যাকার্ডটি ব্যবহার করিনি। আমাদের স্লোগান নির্বাচনে আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল। প্রক্টর দফতরে আমার সঙ্গে কথা বলে মুচলেকা নিয়েছে।

ছাত্র ফেডারেশন রাজশাহী মহানগর শাখার আহ্বায়ক জিন্নাত আরা বলেন, আমাদের কর্মসূচি ছিল মূলত নিরাপদ সড়কের দাবিতে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মোকলেসুর রহমান বলেন, আমরা তাদেরকে কোনোরূপ হেনস্থা করিনি। প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তি করে তো কেউ পার পেয়ে চলে যেতে পারে না। এজন্য তাদের সঙ্গে কথা বলেছি।

মেশকাত মিশু/এমএসআর