উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রাসাদ মজুমদার, ইনসেটে আবরার ফাহাদ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলা পরিচালনা করতে এ পর্যন্ত প্রায় ৫৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রাসাদ মজুমদার।

মঙ্গলবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে রায়ের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।

উপাচার্য বলেন, আবরারের পরিবারের পক্ষ থেকে যেটুকু চাওয়া হয়েছে, তা আমরা দিয়েছি। মাসিক সাহায্য করছি। প্রতিমাসে পঁচাত্তর হাজার টাকা দিচ্ছি। পরিবার আর্থিকভাবে সংকটে পড়েছে। আমি ভিসির দায়িত্ব পাওয়ার পর চলতি বছরের জুলাই থেকে প্রতিমাসে ৭৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। 

তিনি বলেন, আইনি সহায়তা, আইনজ্ঞের ফি, স্বাক্ষী শিক্ষার্থীদের আনা-নেওয়ার খরচ, আনুষঙ্গিক সব খরচ, এমনকি ঢাকায় এসে থাকার খরচ, সবই আমরা বুয়েট থেকে বহন করেছি। প্রায় ৫৫ লাখ টাকা এ পর্যন্ত গেছে।

অধ্যাপক সত্য প্রাসাদ মজুমদার বলেন, দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত রায় আজকে আমরা পেয়েছি। আবরার হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার হয়েছে। দ্রুতই রায় হয়েছে। তবে কোভিড পরিস্থিতি না থাকলে এ রায় আরও দ্রুত হতো। বিচার বিভাগের এ রায়ের ওপর আমাদের আস্থা রাখা উচিত। এখন আমরা আশা করি, এ রায় যেন দ্রুত ও স্বল্প সময়ের মধ্যে কার্যকর করা হয়।

তিনি বলেন, আমাদের সময় একেকজন ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত থেকেও একসঙ্গে ক্লাস করেছি। আমরা চাই, বুয়েট ক্যাম্পাসে যেন তেমনটি ফিরে সে। আমরা চাই, শিক্ষার্থীদের মধ্যে যেন পূর্বের সেই ভালোবাসা এবং মানবতাবোধ ফিরে আসে। এজন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের আরও গাইডেন্স দিতে চেষ্টা করছি।

দুপুরে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালত আলোচিত আবরার হত্যা মামলায় ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচজনের যাবজ্জীবনের আদেশ দেন।

২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে আবরারকে তার কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে যান বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। তারা ২০১১ নম্বর কক্ষে নিয়ে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করেন। রাত ৩টার দিকে শেরে বাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। 

এ ঘটনায় ওই বছরের ৭ অক্টোবর রাজধানীর চকবাজার থানায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পুলিশ পরে ২২ জনকে গ্রেফতার করে। এর মধ্যে আটজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এদের সবাই বুয়েট ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।

আবরার ফাহাদ বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন।
 
এইচআর/আরএইচ