শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূমিকম্পের প্রস্তুতি ও সাড়াদান বিষয়ে ‘দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে তরুণদের সম্পৃক্তকরণ’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে তরুণদের সম্পৃক্ততাই ভূমিকম্পের ঝুঁকি কমাতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বক্তারা।

কর্মশালায় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা ত্রিশ ভাগের বেশি মানুষ ১০ থেকে ২৪ বছরের তরুণ। এরাই দেশের ভবিষ্যৎ কর্ণধার। তাই সৃজনশীল চিন্তা-ভাবনা ও সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে তরুণরাই পারে ভূমিকম্পপ্রবণ এ দেশে ক্রমবর্ধমান হারে বাড়তে থাকা ভূমিকম্পের ঝুঁকি হ্রাস করতে।

রোববার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিনি অডিটোরিয়ামে ব্র্যাক হিউম্যানিটেরিয়ান কর্মসূচি এবং শাবির পেট্রোলিয়াম এবং মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং (পিএমই) বিভাগের যৌথ আয়োজনে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এবং একাত্তর টিভির সাংবাদিক নাজনীন মুন্নির সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

এছাড়া বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক দিলারা রহমান, সিলেট বিভাগীয় কমিশনার ড. মোহাম্মাদ মোশাররফ হোসেন (অতিরিক্ত সচিব) ও ব্র্যাক হিউম্যানিটেরিয়ান কর্মসূচির পরিচালক জনাব সাজেদুল হাসান প্রমুখ।

সেমিনারে আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ এবং সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিএমই বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরহাদ হাওলাদার।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিলেট বিভাগীয় কমিশনার ড. মোহাম্মাদ মোশাররফ হোসেন (অতিরিক্ত সচিব) বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ সাস্টেইনেবল ডেভলপমেন্ট গোলকে (এসডিজি) সামনে রেখে এগিয়ে যাচ্ছে। তাই এ গোলকে ধারণ করে টেকসই বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। এজন্য তরুণ প্রজন্মকে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আসতে হবে, কারণ তারাই আগামী দিনের কর্ণধার।

সেমিনারে ব্র্যাক হিউম্যানিটেরিয়ান কর্মসূচির পরিচালক সাজেদুল হাসান ভূমিকম্প মোকাবেলায় তরুণদের উপযুক্ত ও ধারাবাহিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এলাকা ভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশকে উন্নত দেশে পরিণত করতে হলে আমাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে। বর্তমানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার পাশাপাশি গবেষণা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে এগিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল উন্নয়নমূলক কাজ সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে করতে চাই। পরিশেষে এ ধরনের প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করায় ব্র্যাক, পিএমই বিভাগসহ সংশ্লিষ্ঠ সকলকে ধন্যবাদ জানান উপচার্য।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, সিসিকের সকল উন্নয়নমূলক কাজ সিলেট জেলা প্রশাসন, শাবিপ্রবির বিশেষজ্ঞ শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ঠ সকলকে সঙ্গে নিয়ে করতে চাই। সিলেট ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা হওয়ায় এখানে বিল্ডিংগুলো নিয়ম মেনে তৈরি করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এতে ঝুঁকি রেখে কোনো বিল্ডিং তৈরি করতে দেয়া হবে না। পরিশেষে ভূমিকম্পের ঝুঁকি হ্রাস করতে সচেতনতায় এবং বিভিন্ন প্রশিক্ষণমূলক কর্মশালায় অংশ নিতে তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মেয়র।

এসময় ভূমিকম্পের ঝুঁকি হ্রাস, প্রস্তুতি ও সাড়াদানের ওপর সৃজনশীল চিন্তা ও দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য পাঁচজনকে পুরস্কৃত করা হয়। 

পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন পিএমই বিভাগের নাহিদ হাসান নাঈম, মালিহা আঞ্জুমান, কাজী রিয়াদ, সিইপি বিভাগের রিফাত এবং এফইএস বিভাগের ফাতিমা আনবার ঐশি।

জুবায়েদুল হক রবিন/এমএএস