বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জনি পারভীনকে অপসারণের দাবিতে প্রশাসনিক ভবন অবরুদ্ধ করে অনশন করছেন অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

রোববার (০২ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনশন পালন শুরু করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলছেন, আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত অনশন চলবে।

বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শাফিউল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল ডিসেম্বর মাসের মধ্যে বিভাগীয় প্রধানকে অপসারণ করা হবে। কিন্তু তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় অনশন কর্মসূচি পালন করছি। এখন আর কোনো আশ্বাস নয়, আমাদের দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন বলেন, গত মাস থেকে আমরা বিভাগীয় প্রধান জনি পারভীনকে অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন শরিফুল ইসলাম স্যার আমাদের আশ্বাস দিয়েছিল ডিসেম্বর মাসের মধ্যে বিভাগের প্রধান পরিবর্তন হবে। কিন্তু তা না হওয়ায় আমরা অনশন করছি।

একই বিভাগের শিক্ষার্থী সাইদ বলেন, আমাদের ৩ মাস ধরে ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছে না। আমরা বিভাগীয় প্রধানকে জানিয়েছি তিনি সমাধান দিতে পারেননি। তিনি ফোন রিসিভ করেন না। এর আগেও আন্দোলন করেছি। কোনো ফলাফল আসেনি। তাই বাধ্য হয়ে আজ আন্দোলনে নেমেছি।

প্রসঙ্গত, বিভাগীয় প্রধান অপসারণের দাবিতে গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

২০ ডিসেম্বর বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন শরিফুল ইসলাম, বহিরাঙ্গণ কার্যক্রম দফতরের পরিচালক সাব্বীর আহমেদ আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলে আন্দোলন স্থগিত করা হয়।

লিখিত অভিযোগে শিক্ষকরা জানান, অর্থনীতি বিভাগ সেশনজটমুক্ত ও আইকিউএসি রেটিংয়ে প্রথম স্থানপ্রাপ্ত বিভাগ ছিল। কিন্তু জনি পারভীন বিভাগীয় প্রধান হওয়ার পর থেকে লাগাতার অনুপস্থিত থাকছেন। করোনাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে অনলাইনে ক্লাস চালু করলেও তিনি ১ বছর সাত মাসেও কোনো একাডেমিক সভা আহ্বান এবং শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করেননি। ফলে শিক্ষার্থীরা সেশনজটে পড়েছে।  

অভিযোগপত্রে বিভাগের অধ্যাপক ড. মোরশেদ হোসেন, সহকারী অধ্যাপক খন্দকার জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী অধ্যাপক শাফিউল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক হাবিবুর রহমান, সহকারী অধ্যাপক বেলাল উদ্দীন এবং প্রভাষক কাজী নেওয়াজ মোস্তফা স্বাক্ষর করেন।

তবে অর্থনীতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জনি পারভীন সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমিই শিক্ষকদের হ্যারেজমেন্টের শিকার। তারাই রেজাল্ট আটকে রেখেছিলেন। ক্লাস-পরীক্ষা শুরুর জন্য একাধিকবার মিটিং ডাকলেও শিক্ষকরা আসেননি। বিভিন্ন সময় শিক্ষকরাই খারাপ আচরণ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বিষয়গুলো অবগত করেছি।

শিপন তালুকদার/এমএসআর