হল প্রভোস্টের পদত্যাগ, হলের সমস্যা সমাধান এবং ছাত্রীবান্ধব প্রভোস্ট নিয়োগের দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলন করছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীরা। দাবি না মানায় হল প্রভোস্টের কক্ষের তালা ভেঙে নতুন তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

পরে দাবি মেনে নিতে শনিবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত আল্টিমেটাম দেয় তারা। দাবি মেনে না নিলে পরে আবারও আন্দোলনের হুশিয়ারি দেওয়া হয়।

শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) বেলা ১১টায় উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল।

এ সময় শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নিয়ে তা বাস্তবায়নে একমাসের সময় চান উপাচার্য। তবে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে সময় না দিয়ে উপাচার্যের ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে হল প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবি করে।

এ সময় তারা তিনদফা দাবি তুলে ধরে। দাবিগুলো হলো- দায়িত্বহীন প্রভোস্ট কমিটিকে পদত্যাগ করতে হবে, অবিলম্বে হলের যাবতীয় অব্যবস্থাপনা নির্মূল করতে হবে, সুস্থ-স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে, অবিলম্বে ছাত্রীবান্ধব ও দায়িত্বশীল প্রভোস্ট কমিটি নিয়োগ দিতে হবে। শনিবার সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে দাবিগুলো মেনে না নিলে আবারও আন্দোলনের হুশিয়ারি দেয় শিক্ষার্থীরা।

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) রাতে বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে হল প্রভোস্টকে ফোন দিলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথাবার্তার একপর্যায়ে এতরাতে আসতে পারবে না উল্লেখ করে ‘বের হয়ে গেলে বের হয়ে যাও, কোথায় যাবা তোমরা? আমার ঠেকা পড়ে নাই’ এমন মন্তব্য করেছেন বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রীহলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক জাফরিন আহমেদ।

এ ঘটনার পর প্রভোস্টের পদত্যাগ, আবাসিক ছাত্রীহলের বিভিন্ন সমস্যা এবং বিভিন্ন দাবিতে ৯টা থেকে রাত আড়াইটা পর্যন্ত টানা পাঁচ ঘণ্টা বিক্ষোভ করেছেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। দাবি আদায়ে রাত ১২টা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান করে তারা। পরে রাত আড়াইটায় উপাচার্যের আশ্বাসে হলে ফেরে শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আমরা বিভিন্ন দাবিতে হল প্রভোস্টকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জরুরি উল্লেখ করলে তিনি বলেন, কিসের জরুরি? কেউ তো আর মারা যায় নাই।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, হল প্রভোস্টরা প্রায় সময়ই আমাদের সিট ক্যান্সেলের ভয় দেখান। এ ছাড়া প্রায় সময়ই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। হল প্রভোস্টরা শিক্ষার্থীদের প্রায়ই বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের দয়া করে থাকতে দিয়েছি এটাই বেশি।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের কথা দিয়েছি আমরা তাদের দাবিগুলো পূরণ করব। তারা হলে যেসব সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে সে সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করব। সে জন্য আমরা কিছু সময় চেয়েছি।

জুবায়েদুল হক রবিন/আরআই