সরকারি সিদ্ধান্তের সঙ্গে মিল রেখে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কর্তৃপক্ষ। এমন সিদ্ধান্তে আজ (২১ জানুয়ারি) থেকে শুরু হওয়া ঢাবি ছাত্রলীগের কর্মী সমাবেশ এবং আগামী ৩০ জানুয়ারি হল সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।

তবে যথাসময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কর্মী সমাবেশ ও হল সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন।

তিনি বলেন, হলগুলো যেহেতু খোলা থাকছে এবং সীমিত সংখ্যক কর্মী রেখে যেহেতু রাজনৈতিক কর্মসূচি সম্ভব, সেহেতু আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং প্রজ্ঞাপনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যথাসময়ে কর্মসূচিগুলো অব্যাহত রাখতে পারব বলে আশা করছি।

হল সম্মেলনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা প্রত্যাশা করছি হল সম্মেলনে কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না। আমরা ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে শুধুমাত্র পদপ্রত্যাশী ও সীমিত সংখ্যক কর্মী যাদের টিকা কার্ড আছে তাদের নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংক্ষিপ্ত পরিসরে কর্মসূচিটি সম্পন্ন করব।

এদিকে, হল সম্মেলন- ২০২২ উপলক্ষে আজ শুক্রবার জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ছাত্রলীগের কর্মী সমাবেশের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে পাঁচদিনব্যাপী কর্মী সমাবেশ।

সূচি অনুযায়ী, ২১ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় মুক্তিযোদ্ধা হল ছাত্রলীগ, সন্ধ্যা ৬টায় পল্লীকবি জসীম উদ্দীন হল ছাত্রলীগ এবং রাত ৮টায় বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

২২ জানুয়ারি সকাল ১০টায় বাংলাদেশ কুয়েত-মৈত্রী হল ছাত্রলীগ, দুপুর ১২টায় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল ছাত্রলীগ; ২৩ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় মাস্টারদা সূর্যসেন হল ছাত্রলীগ, সন্ধ্যা ৬টায় হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হল ছাত্রলীগ, রাত ৮টায় শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল ছাত্রলীগ, রাত ১০টায় স্যার এ এফ রহমান হল ছাত্রলীগের কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়া ২৪ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় রোকেয়া হল ছাত্রলীগ, সন্ধ্যা ৬টায় শামসুন্নাহার হল ছাত্রলীগ, রাত ৮টায় জগন্নাথ হল ছাত্রলীগ, রাত ১০টায় সলিমুল্লাহ মুসলিম হল ছাত্রলীগ; ২৫ জানুয়ারি বিকেল ৪টায় কবি সুফিয়া কামাল হল ছাত্রলীগ, সন্ধ্যা ৬টায় ফজলুল হক মুসলিম হল ছাত্রলীগ, রাত ৮টায় ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল ছাত্রলীগ এবং রাত ১০টায় অমর একুশে হল ছাত্রলীগের কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।

প্রসঙ্গত, দেশে করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায়  স্কুল-কলেজ ও সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো দুই সপ্তাহের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ আজ (শুক্রবার, ২১ জানুয়ারি) থেকে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত স্কুল-কলেজ ও সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জেলা ও মাঠ প্রশাসন অধিশাখা থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খোলা থাকবে না কি বন্ধ হবে, সে বিষয়ে পরিষ্কার করে প্রজ্ঞাপনে কিছু লেখা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে এতে লেখা হয়েছে-  বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজ নিজ ক্ষেত্রে অনুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়েছে, সামাজিক/রাজনৈতিক/ধর্মীয়/রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে ১০০-এর বেশি জনসমাবেশ করা যাবে না। এসব ক্ষেত্রে যারা যোগদান করবেন তাদের অবশ্যই টিকা সনদ বা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পিসিআর সার্টিফিকেট আনতে হবে।

সরকারি/বেসরকারি অফিস, শিল্প-কারখানাগুলোতে কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের টিকা সনদ গ্রহণ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে দায়িত্ব বহন করবেন।

বাজার, শপিং মল, মসজিদ, বাসস্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট, রেল স্টেশনসহ সব ধরনের জনসমাবেশে মাস্ক ব্যবহারসহ যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে।

দেশে করোনার সর্বশেষ পরিস্থিতি

গতকাল স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে তাতে একদিনে ৪ জনের মৃত্যুর কথা জানানো হয়েছে।  নতুন করে  ১০ হাজার ৮৮৮ জনের করোনা শনাক্ত হওয়ার কথাও জানানো হয়। শনাক্তের হার ২৬ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

এইচআর/এমএআর/