শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে অনশনে বসেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪ জন শিক্ষার্থী। গত বুধবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেল ৩টা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশনে বসেছেন তারা। 

শিক্ষার্থীদের অনশনে বসার ৪৮ ঘণ্টা পার হয়েছে। এরই মধ্যে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৩ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে একজন সুস্থ হয়ে আবার অনশনস্থলে ফিরেছেন। 

এদিকে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষকের প্রতিনিধি দল বারবার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের অনশন ভাঙার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়ে তাদের ফিরে যেতে দেখা গেছে। সর্বশেষ গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের  শিক্ষক প্রতিনিধি দল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এসে কথা বলার চেষ্টা করেন। তারা বলেন, আমরা কেউ এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে আসিনি। আমরা তোমাদের কথা শুনতে এসেছি।

এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের জিজ্ঞেস করেন যে, তারা তাদের দাবির সঙ্গে একমত কিনা। কিন্তু শিক্ষকদের কাছ থেকে হ্যাঁ সূচক উত্তর না পেয়ে আবারো তাদের কথা না শুনে তাদের ফিরিয়ে দেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টা এবং আড়াইটার সময়ও শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দল অনশনরত শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে আসেন। সেসময়ও শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একমত না হওয়ায় তারা তাদের ফিরিয়ে দেন।

এর আগে বুধবার (১৯ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত শতাধিক শিক্ষকের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করেন। এ সময়ও তারা শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে না পেরে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান।

ওই দিন রাত সাড়ে ৮টায় শিক্ষকবৃন্দ আন্দোলনস্থলে উপস্থিত হলে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় শিক্ষকরা তাদের দাবির সঙ্গে একমত কিনা তা জানতে চান শিক্ষার্থীরা। 

শিক্ষার্থীরা বলেন, যদি আপনারা আমাদের এক দফা দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেন, তাহলে আমরা আপনাদের সঙ্গে কথা বলবো। এছাড়া আমরা আপনাদের সঙ্গে কোনো ধরনের কথা বলতে রাজি নই।

এ সময় শিক্ষকরা তাদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের কথা বলতে বাধা দেন। একপর্যায়ে শিক্ষকরা ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এসেছিলাম আমাদের শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে। আমরা তাদের কাছে সে সময়টুকু চেয়েছি যেন এ ঘটনার পেছনে কারা জড়িত সেটা খুঁজে বের করতে পারি। শিক্ষার্থীরা আমাদের সে সুযোগটা দেয়নি। আমরা আবার চেষ্টা করব, যেন তাদের বুঝাতে পারি সেটা। আমাদের শিক্ষকরাও আসবেন, যেন তাদের বোঝানো যায় সে চেষ্টাও তারা করবেন।

এদিকে অনশনরত এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাব। এতে যদি আমাদের মৃত্যুও হয় তাহলেও আমরা এ স্থান থেকে সরব না।

জুবায়েদুল হক রবিন/আরএআর