সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শনিবার (২৪ জানুয়ারি) বেলা ১২টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিফলক চত্বরে এই কর্মসূচি পালিত হয়।

ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাব্বত হোসেন মিলন বলেন, এ আন্দোলন শুধু শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নয়। দেশের শিক্ষার্থীদের গণদাবির প্রকাশ এ আন্দোলন। অবিলম্বে পদত্যাগ না করলে সেই উপাচার্য পালানোর পথ খুঁজে পাবেন না। পালানোর জন্য হলেও তাকে পদত্যাগ করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আজকের মধ্যে পদত্যাগ না করলে সারাদেশে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়বে। দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাইম বলেন, আমরা দেখছি বর্তমান সময়ে শিক্ষার্থীদের ওপরই সবচেয়ে বেশি নিপীড়িত করা যায়। মামলা করা যায়, ছাত্রলীগকে দিয়ে হামলা করা যায়। আমরা জানতে চাই কোন অদৃশ্য শক্তির কারণে সে নির্লজ্জ উপাচার্য এখনো বসে আছেন? শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করা হয় তখন তারা ঘুমে থাকে, ৩ দিন পরে ঘুম থেকে উঠে বলেন শিক্ষকদের নাকি অপমান করা হয়েছে। শিক্ষকদের মধ্যে একটা দালাল শ্রেণি তৈরি হয়েছে।

নাগরিক ছাত্র ঐক্যের সভাপতি মেহেদী হাসান মুন্না বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়া নিয়ে হওয়া আন্দোলনে কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ছাত্র সংগঠনকে দিয়ে হামলা করাতে হবে? দেশে যে স্বৈরাচারী কাঠামো তা উচ্ছেদ করা না গেলে শিক্ষার্থীরাসহ সবাই মেরুদণ্ডহীন হয়ে বেঁচে থাকবে।

আব্দুল মজিদ অন্তর বলেন, সরকার কোনো সমাধান করতে পারছে না। কারণ তাদের নিয়োগ দেওয়া দালালকে রক্ষা করতে গিয়েই তারা সমাধান আনতে পারছে না। শিক্ষার্থীদের মেরুদণ্ডহীন করার জন্য তাদের ওপর হামলা করা হচ্ছে। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিন,  শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে এসব করে লাভ হবে না, হয়নি কখনো। এককেন্দ্রিকভাবে সরকারের দিক থেকে একেক জনকে উপাচার্য নিয়োগ দেয়া হচ্ছে, যাদের কাজই দালালি করা। যার জন্য তারা শিক্ষার্থীদের ওপর যাচ্ছেতাই করতেও পিছপা হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, আমরা শাবি শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে পূর্ণ সংহতি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আমরা কয়েকটি দাবি জানাই, শাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদুদ্দিন আহমদকে পদত্যাগ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার পাশাপাশি ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে ছাত্র সংসদসহ প্রতিনিধিত্বশীল ক্যাম্পাস গড়ে তোলতে হবে।

প্রসঙ্গত, সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ‌ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এই অনশনের প্রতি সংহতি জানিয়ে রাবিতে এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

মেশকাত মিশু/এমএসআর