বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সন্ধানী। ১৯৭৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে যাত্রা শুরু। ধীরে ধীরে বাংলাদেশে স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান আন্দোলনের পথিকৃৎ হয়ে ওঠে সংগঠনটি। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ অর্জন করে স্বাধীনতা পদক। বিরল সম্মাননাপ্রাপ্ত একমাত্র ছাত্রসংগঠনটি এবার কোনোরকম উৎসব-আমেজ ছাড়াই পার করল ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

সংগঠনটির সাবেক দায়িত্বশীল ও উপদেষ্টারা বলছেন, নেতৃত্ব ঘিরে কমিটি-পাল্টা কমিটির ঘোষণায় কার্যত অচল গৌরব ও ঐতিহ্যের সংগঠন সন্ধানীর কেন্দ্রীয় কার্যক্রম।

জানা গেছে, গত ৭ জানুয়ারি ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সন্ধানী ঢাকা মেডিকেল কলেজ ইউনিটের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি আব্দুর রউফ উল্লাসকে সভাপতি এবং সন্ধানী ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ইউনিটের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি শামীম রেজাকে সাধারণ সম্পাদক করে ২০২১-২২ সেশনের কেন্দ্রীয় পরিষদ গঠন করা হয়। গত ১২ জানুয়ারি ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজে নতুন করে আরেকটি পাল্টা কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটিতে সভাপতি করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী মো. রাফায়েত হোসেনকে (সৌরভ)। সাধারণ সম্পাদক করা হয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজের নিশিত কুমার মন্ডলকে।

সংগঠনটির সাবেক দায়িত্বশীল ও উপদেষ্টারা বলছেন, নেতৃত্ব ঘিরে কমিটি-পাল্টা কমিটির ঘোষণায় কার্যত অচল গৌরব ও ঐতিহ্যের সংগঠন সন্ধানীর কেন্দ্রীয় কার্যক্রম

নবগঠিত কমিটির একাংশের সভাপতি মো. রাফায়েত হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আমাদের কমিটি নিয়ে যেহেতু একটু সমস্যা চলছে, এজন্য আমাদের উপদেষ্টা পরিষদ থেকে আপাতত কেন্দ্রীয় পরিষদের ব্যানারে কোনো প্রোগ্রাম করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে, সারা দেশে সন্ধানীর যেসব ইউনিট আছে, সেগুলো থেকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নানা আয়োজন করা হয়েছে।’

রক্তদান, ড্রাগব্যাংক, মরণোত্তর চক্ষুদান, হেলথ ক্যাম্পের পাশাপাশি দেশজুড়ে বছরব্যাপী বহু কাজে জড়িয়ে আছে সন্ধানী / ছবি- সংগৃহীত

‘সন্ধানী আমাদের অনেক প্রিয় আর ভালোবাসার একটা সংগঠন। সবসময় এটা মানুষের সেবায় কাজ করে। এখন সন্ধানীর কেন্দ্রীয় কমিটিতে সমস্যা হওয়ায় সারা দেশের মেডিকেল সোসাইটিতে ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। আমি ব্যক্তিগতভাবেও এ ঘটনায় দুঃখ পেয়েছি। আসলে ভাবমূর্তি যতটুকু নষ্ট হয়েছে, এটা কভার করাও সময়ের ব্যাপার।’

নেতৃত্ব নিয়ে কেন দ্বন্দ্ব— এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটি নিয়ে একটু সমস্যা হয়েছে। কারণ, যেসব মেডিকেল থেকে দুপক্ষের দুটি কমিটি হয়েছে, সেগুলোতে নানা রকম ঝামেলা তৈরি হয়েছে। নতুন কমিটি হওয়ার কথা ছিল জানুয়ারির ১৪-১৫ তারিখে। এর আগে অর্থাৎ গত বছরের ১০ ডিসেম্বর আমাদের ষাণ্মাসিক সম্মেলন হয়। সেখানে হাউজ (সবগুলো মেডিকেল নিয়ে যে মিটিং হয়) থেকে পরবর্তী সম্মেলন অর্থাৎ ৪০তম বার্ষিক সম্মেলন ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজে হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়। তবে কিছু মেডিকেল এর বাইরে গিয়ে তাদের মতো করে আলাদা একটি সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করে। সে অনুযায়ী তারা গত ৭ জানুয়ারি সম্মেলন করে। কিন্তু ষাণ্মাসিক সম্মেলনে হাউজ থেকে বার্ষিক সম্মেলন নিয়ে যে সিদ্ধান্ত ছিল, সে অনুসারে যেহেতু ১৪-১৫ জানুয়ারি করোনা সংক্রমণ রোধে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়, তাই সম্মেলনকে এগিয়ে নিয়ে এসে ১২ জানুয়ারি ফরিদপুরে আমরা সম্মেলন করি।

কমিটি গঠন প্রসঙ্গে রাফায়েত হোসেন বলেন, ‘আমরা ২৯ সদস্যের কমিটি গঠন করেছি। এতে আমি সভাপতি এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজের নিশিত কুমার মন্ডল সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। এখন চলমান দ্বন্দ্ব নিরসনে উপদেষ্টাদের পক্ষ থেকে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে, ওনারা আমাদের সিনিয়র, আমাদের অভিভাবক; ওনারা আমাদের নিয়ে বসে সাংবিধানিকভাবে যেটা ঠিক এবং ওনাদের থেকে যে সিদ্ধান্ত আসে প্রিয় সন্ধানীর স্বার্থে আমরা সেটা মেনে নেব।’

নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব প্রসঙ্গে অপর অংশের সভাপতি আব্দুর রউফ উল্লাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, সংগঠনের এমন অচলাবস্থা সত্যিই খুব খারাপ লাগে। এটা তো একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এটা শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, সবধরনের মানুষকে নিয়ে কাজ করে। এখন সমস্যা হলো, সন্ধানীর একটা পূর্ণাঙ্গ সাংবিধানিক কমিটির বিরুদ্ধে গিয়ে পাল্টা কমিটি গঠন করা হয়েছে। এটা পুরোপুরি গঠনতন্ত্রবিরোধী।

কর্ণিয়া সংগ্রহ বিষয়ক প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন সন্ধানীর সদস্যরা। ছবি- সন্ধানী

‘গত ৩ ফেব্রুয়ারি সিনিয়র সন্ধানীয়ানরা বসেছিলেন, আমিও সেখানে ছিলাম। সেখানে চলমান সংকট নিরসনে ১৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। সরাসরি তাদেরকে নিয়ে যখন ৩ জানুয়ারি বসা হয়েছিল, তখন আমরা অনেকগুলো যুক্তি উপস্থাপন করেছিলাম। সেগুলোর খণ্ডন তারা করতে পারেননি।’ 

‘তারা ষাণ্মাসিক সম্মেলন করেছে আমাদের রেখে। ঢাকা মেডিকেল, ময়মনসিংহ মেডিকেল, উত্তরা আধুনিক মেডিকেলসহ অনেকগুলো ইউনিটকে সেখানে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। কারণ, তারা চাচ্ছিল তাদের বার্ষিক সম্মেলনটা ফরিদপুর মেডিকেলে করবে। কিন্তু সংবিধান অনুযায়ী সম্মেলন পায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ। তারা ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজকে সম্মেলন করতে দেবে না, ফরিদপুর মেডিকেলেই করবে। এজন্যই তারা ষাণ্মাসিক সম্মেলন সন্ধানীর ভবনে না করে সাভারের একটি রিসোর্টে আয়োজন করে।’ 

আব্দুর রউফ উল্লাসের অভিযোগ, গত ৭ জানুয়ারি যে মিটিংয়ে আমাদের কমিটি হয়েছে, ওই কমিটির সদস্যরাও আমাদের মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন। তাদের আমরা ফুল দিয়েছি, সংগঠনের টি-শার্ট দিয়েছি। সেগুলোর ছবিও আমাদের কাছে আছে। আমাদের কমিটিতে জায়গা পায়নি বলে তারা নতুন করে কমিটি দিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে বর্তমানে সন্ধানী ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) ইউনিট ও কেন্দ্রীয় পরিষদের উপদেষ্টা আবুল বাশার ঢাকা পোস্টকে বলেন, সন্ধানী হলো স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত একমাত্র ছাত্রসংগঠন। মেডিকেল অঙ্গনে এটা খুবই গর্বের নাম। এমন একটা সংগঠনের এমন দুরবস্থা, আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটায়। ২০০৫ সালেও এমন একটি ক্রাইসিস তৈরি হয়েছিল।

‘সন্ধানী একটি অরাজনৈতিক সংগঠন হলেও এটা এখন রাজনীতিকীকরণের চেষ্টা চলছে। গত ৭ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে সন্ধানীর একটি কমিটি হওয়ার পরও কয়েকটা মেডিকেল ইউনিট মিলে আরেকটি কমিটি গঠন করে। যদিও সন্ধানীর মোট ২৮টি ইউনিটের মধ্যে ২২টিকে নিয়ে প্রথম কমিটি গঠন করা হয়। সন্ধানীর নীতিমালাতে বলা আছে, দুই-তৃতীয়াংশ ইউনিট যদি কোনো সম্মেলনে উপস্থিত থাকে, তাহলে তারা কমিটি গঠন করতে পারবে। এটা সংসদের মতো।’

আবুল বাশারের অভিযোগ, ‘সন্ধানীতে দ্বন্দ্ব তৈরির পেছনে আছেন আমাদের কিছু সিনিয়র উপদেষ্টা। তারা আসলে সন্ধানীকে নিজেদের পকেটে ভরে রাখতে চান। তারা সংগঠনটিকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি মনে করে ব্যবহার করে আসছিলেন। তাদের কারণেই এ দ্বন্দ্বের সৃষ্টি। গত বছরের শেষের দিকে সন্ধানীর ষাণ্মাসিক সভা হওয়ার কথা ছিল নিজ অফিস ভবনে। কিন্তু কিছু উপদেষ্টা মিলে সেই সম্মেলন নিয়ে যান সাভারের একটি রিসোর্টে। সেখানে ঢাকা মেডিকেল, ময়মনসিংহ মেডিকেলসহ বিভিন্ন মেডিকেল উপদেষ্টাদের ভয়ভীতি দেখানো হয়। তাদের সম্মেলনে ঢুকতেও দেওয়া হয়নি।’

গত ৭ জানুয়ারি সন্ধানী ভবনের মিলনায়তনে সন্ধানী কেন্দ্রীয় পরিষদের আয়োজনে ‘সন্ধানীর ৪০তম কেন্দ্রীয় বার্ষিক সম্মেলন’ অনুষ্ঠিত হয় / ছবি- সংগৃহীত

‘ঢাকাস্থ সন্ধানীর মেডিকেল ইউনিটগুলোকে বাদ দিয়ে ফরিদপুর মেডিকেলে বার্ষিক সম্মেলনের সিদ্ধান্ত নেয় তারা। সে অনুসারে সম্মেলন করে নিজেদের মতো কমিটি গঠন করে। অথচ এ বছর সন্ধানীর সম্মেলনের আয়োজক ছিল ময়মনসিংহ মেডিকেল। কিন্তু তারা নিজেরাই সেটা পরিবর্তন করে নেয়।’

এদিকে, সন্ধানীর উপদেষ্টা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব নিরসনে উপদেষ্টাদের পক্ষ থেকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি একটি মিটিং ডাকা হয়। সেখানে নানা আলোচনা ও পরামর্শের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. তোসাদ্দেক হোসেন সিদ্দিকী জামালের নেতৃত্বে ১৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি হাইপাওয়ার কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে সদস্য সচিব করা হয় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ইএনটি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটুকে। এছাড়া কমিটির প্রধান উপদেষ্টা করা হয় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিকে। এছাড়াও কমিটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, অধ্যাপক ডা. এ কে এম সালেক, সংসদ সদস্য ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্নাকে সদস্য করা হয়।

সন্ধানীর নেতৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্বের বিষয়ে জানতে চাইলে হাইপাওয়ার কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মনিলাল আইচ লিটু ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা যারা উপদেষ্টা হিসেবে সন্ধানীর সঙ্গে আছি, চলমান সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সন্ধানীর দ্বন্দ্ব নিরসনে ১৫ সদস্যের কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে পাঁচজনকে উপদেষ্টা হিসেবে রাখা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, এ কমিটির মাধ্যমে সন্ধানীর সার্বিক যে অচলাবস্থা, সেটা দূর করতে পারব। মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এ কমিটির চিফ অ্যাডভাইজার। তিনি একসময় সন্ধানীর জেনারেল সেক্রেটারি ছিলেন, এখন উপদেষ্টা।

‘সন্ধানীর মতো এমন একটা গৌরবোজ্জ্বল সংগঠনে এমন দ্বিধা-বিভক্তি আর অচলাবস্থা কখনই কারও কাম্য নয়। যত দ্রুত সম্ভব আমরা এটা সমাধানের চেষ্টা করব’— যোগ করেন হাইপাওয়ার কমিটির সদস্য সচিব।

সন্ধানী ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ ইউনিটের সহযোগিতায় ৪০তম কেন্দ্রীয় বার্ষিক সম্মেলন / ছবি- সন্ধানী

কেন এমন দ্বিধীকরণ— জানতে চাইলে ডা. মনিলাল আইচ লিটু বলেন, ‘সমস্যাটা হয়েছে মূলত কমিটি গঠন নিয়ে। কয়েক দিনের ব্যবধানে দুই স্থানে সন্ধানীর ব্যানারে দুটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এখন আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখব কোনটা যৌক্তিক আর কোনটা অযৌক্তিক।  কোনটা সাংবিধানিক আর কোনটা অসাংবিধানিক। সন্ধানীর যে নীতিমালা রয়েছে, তার আলোকেই আমরা এর সমাধান করব। এজন্য আমরা আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরে সন্ধানী ভবনে বসব। সেখানে উভয়পক্ষের পাঁচ সদস্যকে আহ্বান করা হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, সন্ধানীর শুভ সূচনা হয় ১৯৭৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি, ঢাকা মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছয় শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান, মোশাররফ হোসেন, ইদ্রিস আলী, আবদুল কাইউম, মোস্তফা সেলিমুল হাসনাইন ও খুরশীদ আহমেদের হাত ধরে। রক্তদানের পাশাপাশি মানুষের চক্ষুব্যাংক হিসেবেও কাজ করে সন্ধানী। মৃত্যুর আগে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত চক্ষুদানের ব্যাপারে উৎসাহ দিয়ে থাকে সংগঠনটি। যাতে ভবিষ্যতে সেগুলো অন্য কেউ ব্যবহার করতে পারেন।

সমাজসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য ২০০৪ সালে বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠানটিকে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার ‘স্বাধীনতা পদকে’ ভূষিত করে। ১৯৭৮ সালের ২ নভেম্বর ঢামেক হাসপাতালের ব্লাডব্যাংকে সন্ধানী প্রথমবারের মতো ‘স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির’ আয়োজন করে। পরে দিনটিকে ‘জাতীয় স্বেচ্ছায় রক্তদান ও মরণোত্তর চক্ষুদান দিবস’ হিসেবে পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। ১৯৮২ সালে ‘সন্ধানী ডোনার ক্লাব’ এবং ১৯৮৪ সালে ‘সন্ধানী জাতীয় চক্ষুদান সমিতি’ ও ‘সন্ধানী জাতীয় চক্ষুব্যাংক’ প্রতিষ্ঠিত হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে যাত্রা শুরুর পর সন্ধানীর দ্বিতীয় ইউনিট হিসেবে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ আত্মপ্রকাশ করে ১৯৭৯ সালের ১৮ অক্টোবর। সন্ধানী মূলত মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে পরিচালিত একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। প্রতিটি ইউনিটের কার্যক্রম পরিচালিত হয় ওই নির্দিষ্ট ইউনিটের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত একটি কার্যকরী কমিটির মাধ্যমে। সবগুলো ইউনিটকে সমন্বয় করার জন্য রয়েছে একটি ‘কেন্দ্রীয় পরিষদ’।

টিআই/এমএআর/