গণধর্ষণের হুমকি পেয়ে নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয় সপ্তম শ্রেণির মাদরাসাছাত্রী সুমাইয়া (ছদ্মনাম)। ঘটনার ৩৪ দিন পর বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে তার মৃত্যু হয়েছে। বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় এ ঘটনা ঘটেছে।

নিহতের স্বজন ও পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় একটি মাদরাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী সুমাইয়াকে (১৬) দীর্ঘদিন ধরেই উত্ত্যক্ত করে আসছিলেন উপজেলার ঠাকুরমল্লিক গ্রামের মৃত মোবারেক ফকিরের ছেলে রাকিব ফকির (৩০)। এ ঘটনা সুমাইয়া তার পরিবারকে জানালে রাকিবের স্বজনদের কাছে নালিশ দেওয়া হয়। ২১ জানুয়ারি সকালে রাকিবের বাড়িতে গিয়ে শাসিয়ে আসেন সুমাইয়া মা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাকিব মোবাইলে সুমাইয়াকে গণধর্ষণের হুমকি দেন।

সুমাইয়া মা বলেন, ধর্ষণের হুমকির পর অপমানে সুমাইয়া ওই দিন বিকেলে আমাদের সবার অজান্তে ঘরে বসে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। আমি দেখে ফেলায় তাকে প্রতিবেশীদের সহায়তায় উদ্ধার করে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করাই। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সেখানেও অবস্থার উন্নতি না হলে এবং টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে না পেরে মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসি। আজ সকালে আমার মেয়ে মারা গেছে। 

কান্নায়ে ভেঙে পড়ে তিনি বলেন, আমাকে নিঃস্ব করে দিয়ে গেল আমার মেয়ে। সে চলে গেল এলাকার গুন্ডা রাকিবের জন্য। রাকিবের পরিবারকে হাজার বার বলেছি যেন তারা ছেলেকে ফেরায়, অন্যথায় আমাদের এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলে। কিন্তু রাকিবের কিছুই করল না, মাঝখান দিয়া আমার পরান পাখিটা মরে গেল।

বাবুগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুবুর রহমান জানান, খবর পেয়ে নিহত ওই ছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। 

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর