রংপুরের পীরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কক্ষে থাকা সংরক্ষিত তিনটি আসন (চেয়ার) বেশ সাড়া ফেলেছে। যার একটি আসন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানে রাখা হয়েছে। বাকি দুটির একটি প্রতিবন্ধীদের এবং অপরটি শিশুদের জন্য। থানায় আসা সেবাপ্রত্যাশীরাও ওসির কক্ষে সংরক্ষিত আসন সংরক্ষণের উদ্যোগে ভীষণ খুশি।
 
গত ১১ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার পীরগঞ্জ থানার ওসি হিসেবে যোগদান করেন আব্দুল আউয়াল। এর আগে তিনি নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

নবাগত ওসি আব্দুল আউয়াল পীরগঞ্জে যোগদান করেই তার কক্ষে নতুন তিনটি চেয়ার সংরক্ষণ করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধীর জন্য বসার দুটি আসন ছাড়াও অভিভাবকের সঙ্গে আসা শিশুদের জন্য প্লাস্টিকের ঘোড়ার চেয়ার সংযোজন করেছেন তিনি। কক্ষে চেয়ার সংকট হলেও কেউই সংরক্ষিত আসনগুলোতে বসছেন না। সেবাপ্রত্যাশীরা সংরক্ষিত আসনগুলোর মর্যাদা রক্ষা করায় ওসি নিজেও খুশি।

ওই তিনটি সংরক্ষিত আসন ছাড়াও ওসির কক্ষে সাধারণ মানুষের বসার জন্য আলাদা চেয়ারের ব্যবস্থা রয়েছে। পাশাপাশি কক্ষটিতে দুটি বুক সেলফে পুলিশের চাকরিবিধি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বিষয়ক বইসহ বিভিন্ন বিষয়ে লেখা শতাধিকের বেশি বই সাজিয়ে রাখা হয়েছে।

হঠাৎ সংরক্ষিত আসনের ব্যবস্থা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পীরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল আউয়াল বলেন, আমি জাতিসংঘ মিশনে গিয়ে ৩টি দেশে (সুদান, দক্ষিণ সুদান ও উগান্ডা) দেখেছি, তারা শিশুদের ব্যাপারে খুবই যত্নশীল এবং স্পর্শকাতর। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি। থানায় আমার কক্ষে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা ছাড়া প্রতিবন্ধী এবং শিশুদের জন্য পৃথক চেয়ার সংরক্ষণ করে রেখেছি। মানুষের জীবনের মূল্যবোধকে কাজে লাগিয়ে চাকরি করছি।

তিনি আরও বলেন, থানা হবে শিশুদের জন্য পার্ক। কারণ অনেক শিশুর বাবা-মা অপরাধের কারণে গ্রেফতার হয়ে হাজতে থাকে। ওই বাবা-মার সাথে শিশুরাও আসে। শিশুরা যেন তা বুঝতে না পারে, তাদের বাবা-মা হাজতে রয়েছে। সে জন্যই থানায় শিশুপার্ক করা দরকার। ওরা হাসবে, খেলবে। আমি আগের কর্মস্থলেও শিশুদের পার্ক করেছি। সেখানে শিশুরা এসে খেলাধুলা করে। ওদের মনের বিকাশ ঘটে। 

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরআই