ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরীর সন্তান প্রসব নিয়ে এলাকায় তোলপাড় চলছে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা ঘটেছে উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের একটি গ্রামে। 

অভিযোগ উঠেছে, ওই গ্রামের হরিদাস ভৌমিক নামে এক ব্যক্তি কিশোরীকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এতে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে।

ভুক্তভোগী ওই কিশোরীর মা জানান, তার স্বামী বাড়িতে থাকেন না। তিনি অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। হরিদাস ভৌমিকের বাড়ির পাশে একটি পরিত্যক্ত ঘরে মেয়েকে নিয়ে বসবাস করেন তিনি। কিন্তু কাজের জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলে হরিদাস তার মেয়েকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে। গত ১০ দিন আগে সন্তান প্রসব করে তার মেয়ে।

এদিকে কিশোরীর সন্তান প্রসবের ঘটনা জানাজানি হলে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়। এ ঘটনা মীমাংসায় শুক্রবার রাতে সালিস বৈঠকে বসেন গ্রামের সর্দাররা। সালিসে ওই কিশোরীর বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হলে হরিদাসের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এছাড়া কিশোরীর নিরাপত্তার স্বার্থে তাকে ৩০ শতাংশ জমি দেওয়াও সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। তবে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর হরিদাস বিয়ে করবে কি না- সেটি নিয়ে শঙ্কায় আছেন কিশোরীর মা।

সালিসে উপস্থিত একজন জানান, ১৮ বছর না হওয়ায় আইনগতভাবে এখনই বিয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তাই প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর দুইজনের বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গ্রাম্য সালিসে ধর্ষণের বিচার কতটা যৌক্তিক জানতে চাইলে তিনি বলেন, সালিসে সবাই মিলে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে- সেটাই রায়ে ঘোষণা করা হয়েছে।

অভিযোগের ব্যাপারে জানতে হরিদাস ভৌমিকের বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার ছোট ভাই গৌরদাস ভৌমিক জানান, ধর্ষণের অভিযোগ সঠিক নয়। যদি দুইজনের ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হয় তাহলে যেকোনো রায় তারা মেনে নেবে।

নাসিরনগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হালিমা খাতুন বলেন, ঘটনাটি দুঃখজনক। তবে এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবার থেকে অভিযোগ নিয়ে আসেনি। যদি পরিবারটি আইনি সহায়তা চায়, তাহলে তাদের উপজেলা প্রশাসন থেকে সহায়তা করা হবে।

আজিজুল সঞ্চয়/এসপি