শারীরিকভাবে অক্ষম আমেনা খাতুন (৫৫) স্বামীর মৃত্যুর পর ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। চোখে ঝাপসা দেখেন, কানেও কম শোনেন। পুত্র-পুত্রবধূ-নাতনি নিয়ে থাকছেন ঝুপড়ি ঘরে। 

কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ঈদগাঁও ইউনিয়নের মধ্যম মাইজপাড়া গ্রামের মৃত শাহ আলম মিস্ত্রির স্ত্রী আমেনা খাতুন। স্বামী শাহ আলম রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। তার আয় দিয়ে কোনোমতে সংসার চলত। স্বামীর মৃত্যুর পর অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে যায়। পরিবারের চিন্তায় আমেনা খাতুন ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন।

ছোট ছেলে আরাফাত (১৪) বাড়ির খরচ জোগাতে অল্প বেতনে একটি দোকানে চাকরি করে। বড় ছেলে আকতার হোসেন (৩৫) দিন মজুরি করেন। তার বসতবাড়িটি ২৫ বছরের পুরোনো, দেখলে মনে হবে যেকোনো সময় ঘরটি ভেঙে পড়বে। ঘরের চালা পলিথিন দিয়ে ঢাকা। পুত্র-পুত্রবধূ কোনো রকমে ঘরের মধ্যে রাত্রিযাপন করলেও মানসিক ভারসাম্যহীন আমেনার রাত কাটে খোলা আকাশের নিচে। 

বড় ছেলে আকতার হোসেন জানান, ভূমিহীনদের সরকার ঘর উপহার দিয়েছে। ভেবেছিলাম আমরাও পাব। তালিকায়ও নাম ছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত পেলাম না। ঝুপড়ি ঘরেই থাকতে হচ্ছে।

আমেনা খাতুন বলেন, কে দেবে ঘর। ঘরের আশায় মেম্বার-চেয়ারম্যানের পেছনে প্রায় এক বছর ঘুরেছি। কোনো লাভ হয়নি। তবু ঘর ভাগ্যে জোটেনি। ভেবেছিলাম মৃত্যুর আগে ভালো ঘরে বসবাস করতে পারব। কিন্তু জরাজীর্ণ ঝুপড়ি ঘরই আমার ভরসা।

প্রতিবেশীরা জানান, সরকারি ঘর পাওয়ার আশায় আমেনা খাতুন ও তার ছেলে আকবর  কয়েকবার মেম্বার-চেয়ারম্যানের কাছে গেছেন। যারা ঘরের তালিকা করেছে তারা যদি সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করতেন, তাহলে আমেনা খাতুন ঘর পেতেন। ঘরের তালিকার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের অবহেলার কারণে আমেনা খাতুন ঘর পাননি। জরাজীর্ণ ঝুপড়ি ঘরে ২৫ বছর ধরে বসবাস করছে একটি পরিবার যেন দেখার কেউ নেই। 

কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন রায় বলেন, তাদের নিজস্ব জমি থাকলে এনজিওর সঙ্গে কথা বলে একটি বাড়ি করে দেওয়ার চেষ্টা করব।

সাইদুল ফরহাদ/এসপি