সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের (ইউডিসি) উদ্যোক্তা বিলাল হোসাইনকে জামার কলার ধরে টেনে-হিঁচড়ে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয় থেকে বের করে দিয়েছেন নবনির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক ডাবলু। গত রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক ডাবলু আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আশাশুনি মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক। বিলাল হোসাইন বুধহাটা ইউনিয়নের পদ্মদেউলা গ্রামের মহিদুল ইসলামের ছেলে।

বিলাল হোসাইন বলেন, গত ৫ জানুয়ারি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক ডাবলু আমাকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছিলেন। তিনি শপথ গ্রহণ করেন গত ২৪ ফেব্রুয়ারি। এরপর ইউপি সচিবের মাধ্যমে পরিষদ ছাড়তে বলেন। এরপর আমি চেয়ারম্যানের বাড়িতে গিয়ে আমার মায়ের অসুস্থতা ও পরিবারের অভাব অনটনের কথা জানিয়ে অনুরোধ করি। তবে তিনি কর্ণপাত করেননি।

২৭ ফেব্রুয়ারি অফিসে গিয়ে দেখি আমার জায়গায় চেয়ারম্যান রায়হান নামে একটি ছেলেকে বসিয়েছেন। আমি সেখানে গেলে চেয়ারম্যান আমার ওপর রাগন্বিত হয়ে জামার কলার ধরে টানাটানি করেন। মারধর করতে উদ্যত হন। জোরপূর্বক মানুষের মধ্যে টেনে-হিঁচড়ে ঘাড় ধরে অপমানজনকভাবে পরিষদ থেকে বের করে দেন। বলেন, ‘আমি চেয়ারম্যান যা করব এই পরিষদে তাই হবে। তুই যেখানে পারিস যা।’ চেয়ারম্যান খুবই প্রভাবশালী। নির্বাচনের পর তিনি এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে আসছেন। আমি ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছি। কখন আমার ওপর হামলা করে। আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে অভিযোগও করেছি।

এ বিষয়ে বুধহাটা ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক ডাবলু বলেন, বুধহাটা ইউনিয়নের ৪০ হাজার জনগণ। হাজার হাজার মানুষের কাছ থেকে জন্মনিবন্ধনের নামে টাকা নিয়েছে বিলাল হোসাইন। মানুষের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। তার প্রমাণও রয়েছে। সে কারণে জনগণের দাবির প্রেক্ষিতে তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাকে বিদায় করে দেওয়ায় মানুষের মাঝে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে।

চেয়ারম্যানের অভিযোগের বিষয়ে বিলাল হোসাইন বলেন, চেয়ারম্যান যে অভিযোগ করেছেন সেটি সঠিক নয়। চেয়ারম্যান তার কাছের মানুষকে উদ্যোক্তা হিসেবে বসানোর জন্য ষড়যন্ত্র করে এই অভিযোগ করছেন। 

আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়ানুর রহমান বলেন, বুধহাটা ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা বিলাল হোসেন এ ব্যাপারে অভিযোগ করেছেন। এ বিষয়ে আমরা আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেব। সেটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

আকরামুল ইসলাম/আরএআর