মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজ্জামেল হক বলেছেনে, আগামী ২৬ মার্চ থেকে ১৭ এপ্রিলের মধ্যে দেশের সকল মুক্তিযোদ্ধার হাতে ডিজিটাল পরিচয়পত্র ও সনদ তুলে দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে ৩০ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সকল স্মৃতি ও বধ্যভূমি সংরক্ষণ করা হবে।

শনিবার (৫ মার্চ) দুপুরে মানিকগঞ্জ শহীদ মিরাজ তপন স্টেডিয়ামে ঢাকা পশ্চিমাঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের মিলনমেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম দাবি করেছেন- বেগম খালেদা জিয়া নাকি দেশের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা এবং তারেক জিয়া শিশু মুক্তিযোদ্ধা। তারা এই মিথ্যাচার করে তাদের দোষকে ঢাকতে চায়। মুক্তিযুদ্ধের সময় জিয়া বলেছিলেন, `আমি রাজনৈতিক দলের সরকারের অধীনে যুদ্ধ করব না, আমি ওয়ার কাউন্সিল করে যুদ্ধ করব।' অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যে সরকার ছিল, যাকে আমরা মুজিবনগর সরকার বলি। তখন তাকে (জিয়া) সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছিল এবং ক্ষমা চেয়ে সেক্টর কমান্ডারের পদ ফেরত আনেন তিনি। 

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা করেছে। কুৎসা রটিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের বিতর্কিত করারও চেষ্টা করেছিল। বিনা বিচারে, নানা অজুহাতে তখন শতশত মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছে। এখনো মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীরা বসে নেই, তারা দেশকে অকার্যকর করতে নানা ষড়যন্ত্র করছে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে একাধিকবার হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়িয়েছি, আমরা কোনো ষড়যন্ত্রকে আর মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে দেব না।

মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জসহ ঢাকা জেলার পশ্চিমাঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের এই মিলনমেলায় সাড়ে তিন হাজার মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা অংশ নেন।

সকালে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় ও মুক্তিযুদ্ধের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামন খান কামাল। এতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলম দস্তগীর গাজী, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা জামাল মহিউদ্দিন, সংসদ সদস্য শাজাহান খান, নাঈমুর রহমান দুর্জয়, মমতাজ বেগম প্রমুখ।

ঢাকা-২০ আসনের সংসদ সদস্য বেনজির আহমেদকে আহ্বায়ক করে মুক্তিযোদ্ধা মিলনমেলার আয়োজক গঠিত কমিটি করা হয়। এতে সদস্য ছিলেন মানিকগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মহিউদ্দিন। মিলনমেলা উপলক্ষে প্রকাশ করা হয় “জয় বাংলা” নামে একটি স্মারক বই। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র ও স্থানীয় শিল্পীরা গান পরিবেশন করেন।

সোহেল হোসেন/আরএআর