রাজশাহীর চারঘাটের শলুয়া এলাকার বাসিন্দা মহসিন আলী খুন হন ১৯৯১ সালের ডিসেম্বরের শেষের দিকে। পারিবারিক বিরোধের জেরে ছেলে আকছেদ আলী খুন করেন বাবাকে। তখন তার বয়স ছিল ১৭ বছর।

হত্যাকাণ্ডেরও প্রায় ৩০ বছর পেরিয়ে গেছে। ২০১৩ সালে রাজশাহীর বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালত আকছেদ আলীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। সাজা ঘোষণার পর থেকে পলাতক ছিলেন আকছেদ। পরোয়ানা মাথায় নিয়ে আরও প্রায় দশ বছর কাটিয়ে দেন আত্মগোপনে। আত্মগোপনে থেকেই বিয়ে করে সংসার শুরু করেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না দুই সন্তানের জনক আকছেদ আলীর। শনিবার (০৫ মার্চ) বিকেলে চারঘাট থানা পুলিশ তাকে আটক করেন। রোববার তাকে আদালতে নেওয়া হবে।

গ্রেফতার অভিযানে অংশ নেন চারঘাট মডেল থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রাজু আহম্মেদ। তিনি জানান, মায়ের মৃত্যুর পর বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন চাচার শ্যালিকাকে। এরপর আরও একটি বিয়ে করেন বাবা। এ নিয়ে পরিবারে চরম অশান্তি শুরু হলে ছন্নছাড়া হয়ে যান আকছেদ আলী। 

পারিবারিক বিরোধের জেরে ১৯৯১ সালের ডিসেম্বরের শেষের দিকে বাবাকে হত্যা করেন তিনি। তার বিরুদ্ধে ১৯৯২ সালের ১ জানুয়ারি চারঘাট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন চাচা। দীর্ঘ তদন্ত এবং বিচার শেষে ২০১৩ সালে বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালত আকছেদ আলীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। ওই সময় থেকেই পলাতক ছিলেন তিনি।

প্রথম দিকে তিনি রাজশাহীতে আত্মগোপন করেন। পুলিশ তাকে গ্রেফতারে তৎপরতা শুরু করলে ঢাকায় চলে যান। পুরো সময়জুড়ে তিনি রিকশা চালাতেন। প্রায় ৩০ বছর পর শনিবার বিকেলে নিজ এলাকায় ফেরেন আকছেদ। ওই সময় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। রোববার তাকে আদালতে তোলা হবে।

জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) সনাতন চক্রবর্তী জানান, অনেক অফিসার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু আসামি অধরাই থেকে যান। তবে হাল ছাড়েনি পুলিশ। শেষ পর্যন্ত জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/এসপি