আগুনে সব হারানোর পর অবশেষে নতুন রঙিন ঘর ও তিনটা ছাগল পেলেন সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের ইসলাম ঠাকুরপাড়া গ্রামের নুরুল ইসলাম।

রোববার (৬ মার্চ) সকাল ১০টার দিকে শারীরিক প্রতিবন্ধী নুরুল ইসলামের কাছে ঘরটি হস্তান্তর করেন বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনিসুর রহমান ও দ্য বার্ড সেফটি হাউসের চেয়ারম্যান এবং স্বেচ্ছাসেবী সমাজকর্মী মামুন বিশ্বাস।

এ সময় ঘরের পাশাপাশি তাদের দেওয়া হয়েছে তিনটা ছাগল, লেপ-তোশক, থাকার চৌকি, পোশাক ও কাঁচাবাজারসহ সাড়ে সাত হাজার টাকা।

বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করে মামুন বিশ্বাস বলেন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘দ্য বার্ড সেফটি হাউসের উদ্যোগে তাদের পাশে দাঁড়িয়ে এসবের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন কানাডাপ্রবাসী জাকির হোসেন ও তার বন্ধুরা।

জানা যায়, গত (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে লাগা আগুনে পুড়ে যায় শারীরিক প্রতিবন্ধী নুরুল ইসলামের থাকার একমাত্র ঘরসহ সবকিছু। এরপর থেকেই অন্যের বাড়িতে রাত কাটাচ্ছিলেন তিনি ও তার পরিবার। বিষয়টি নজরে আসে সমাজকর্মী মামুন বিশ্বাসের। এর পরিপ্রেক্ষিতে তিনি কানাডাপ্রবাসী জাকির হোসেনকে বিষয়টি জানান। জাকির হোসেন ও তার বন্ধুরা মিলে নুরুলের জন্য মামুন বিশ্বাসের কাছে ৮১ হাজার ৪০০ টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠান।

নুরুল ইসলাম বলেন, আমি অনেক কষ্ট করে সংসার চালাতাম। আগুনে ঘরসহ সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আমি নিঃস্ব হয়ে যাই। কখনো ভাবিনি এমন ঘরে থাকব। মামুন বিশ্বাস ও প্রবাসী ভাইয়েরা ঘর, ছাগল, টাকা দিয়ে আমাকে সাহায্য করেছেন। আমি খুব খুশি হয়েছি। আমি প্রবাসী জাকির হোসেন ও তার বন্ধুদের জন্য দোয়া করব।

মামুন বিশ্বাস জানান, আমরা সবাই যদি যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসি, তাহলে আমাদের সমাজে কোনো মানুষ অবহেলিত থাকবে না। আমাদের সবারই সমাজের কল্যাণে এগিয়ে আসা দরকার। আমি শুধু চেষ্টা করি, ফেসবুক বন্ধুরা এগিয়ে আসেন বলেই প্রতিটি মানবতার কাজ হয়ে যায়।

বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আনিসুর রহমান বলেন, সরকারের পাশাপাশি এ রকম সামাজিক সংগঠন আছে বলেই সমাজের অসহায় মানুষগুলো উপকৃত হচ্ছে। আজ এই অসহায় পরিবারকে যে সহায়তা দেওয়া হয়েছে, তা দেখে আমি অনেক খুশি হয়েছি। আমরা সরকারিভাবেও তাকে কিছু সহায়তা দেব। সমাজের বিত্তবানরা যদি এভাবে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ায়, তাহলে সমাজ পরিবর্তন হবেই।

শুভ কুমার ঘোষ/এনএ