ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার অপারেটর শিক্ষক তৌহিদুল ইসলামের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে ৫ দিন ধরে অনশন করছে ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রী। বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) থেকে ওই শিক্ষার্থী বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে রাণীশংকৈল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। 

অন্যদিকে গত শনিবার ওই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে রাজপথে নামে একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (৭ মার্চ) উপজেলার পৌর শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ মিছিল করে তারা। এ ছাড়া তাদের সহপাঠীর সঙ্গে যে অন্যায়-অবিচার হয়েছে তার সঠিক বিচার না হওয়া পযর্ন্ত ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেয় তারা। 

বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচিতে রাস্তা অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। পরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষ দ্রুত বিচারের আশ্বাস দেন রাণীশংকৈল উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইন্দ্রজিৎ সাহা। শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি শেষ করে সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে ইউএনও বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে।

অনশনরত ওই শিক্ষার্থী বলেন, কম্পিউটার অপারেটর তৌহিদুলের সঙ্গে আমার তিন বছরের প্রেমের সর্ম্পক। তিনি বিয়ের প্রলোভন দিয়ে আমার সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সর্ম্পক করেছেন। এখন তিনি আমাকে এড়িয়ে চলছেন। অন্য জায়গায় বিয়ে ঠিক করেছেন। আমি আমার অধিকার আদায়ের জন্য বিয়ের দাবিতে পাঁচ দিন ধরে তৌহিদুলের বাড়িতে অবস্থান করছি। তৌহিদুলের পরিবার আমাকে বাসা থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমাকে বিয়ে না করলে আমি এ বাসা থেকে যাব না। 

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী মুফসিরাত জাহান বলেন, আমাদের সহপাঠীর সঙ্গে যে অন্যায়-অবিচার হয়েছে তার সঠিক বিচার না হওয়া পযর্ন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। আজ ৫ দিন হয়ে গেল, এখনো কোনো সমাধান হয়নি। 

আরেক শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, চরিত্রহীন শিক্ষকের কঠিন শাস্তি চাই। যাতে তার শাস্তি দেখে আর কোনো শিক্ষক ভুল করেও শিক্ষার্থীদের দিকে কুনজরে না তাকায়। তৌহিদুল গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব আমরা। 

অভিযুক্ত কম্পিউটার অপারেটর শিক্ষক তৌহিদুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়। 

এ প্রসঙ্গে রাণীশংকৈল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সোহেল রানা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি জানার পর আমি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। ওই প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষকের সঙ্গে বসেছি। যতদিন এর সমাধান না হচ্ছে, ততদিন ওই শিক্ষক প্রতিষ্ঠানে আসতে পারবেন না। শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপি দিয়েছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল লতিফ বলেন, শিক্ষক তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীর বাবা মামলা করেছেন। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

এম এ সামাদ/আরআই