অসুস্থ এ শকুনটির চিকিৎসা চলছে এখন

বাংলাদেশে একসময় হরহামেশাই চোখে পড়ত শকুন। এখন এদের দেখা মেলা দুরূহ ব্যাপার। কারণ, শকুন এখন ‘মহাবিপন্নের’ তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। অবশ্য শকুন দেশ থেকে বিলুপ্ত হওয়ার পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ দেখিয়েছে সংশ্লিষ্টরা। এর মধ্যে খাবার-সংকট, নিষিদ্ধ ওষুধ ড্রাইক্লোফেনাকের ব্যবহারকে দায়ী করছেন তারা।

তবে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে ময়মনসিংহ বিভাগে বিলুপ্তপ্রায় দুটি হিমালয়ান শকুনের দেখা মিলেছে। গত রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার ঠাকুরবাখাই গ্রামে পাওয়া যায় একটি শকুন।

অন্তত ৬০ বছর বয়সী শকুনটি দুর্বল হয়ে কংস নদীর পাড়ে পড়ে ছিল। এলাকাবাসী এটিকে দেখে স্থানীয় হেলডস ওপেন স্কাউট গ্রুপের সদস্যদের খবর দিলে, তারা উদ্ধার করে প্রাণী হাসপাতালে নিয়ে যান। এক সপ্তাহ আগেও জামালপুর জেলা থেকে উদ্ধার হয়েছিল এ রকম আরও একটি শকুন।

ফুলপুরের স্কাউট সদস্য তাসফিক হক নাফিও জানান, শকুনটিকে উদ্ধার করে উপজেলা প্রাণী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ভেটেরিনারি সার্জন প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর সম্মিলিতভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্তকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

ফুলপুর ইউএনও শীতেষ চন্দ্র সরকার জানান, শকুনটি কিছুটা রুগণ ও বয়স্ক ছিল। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর রোববার বিকেলেই শেরপুর বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

জানতে চাইলে ময়মনসিংহ বিভাগের বন্যজীবন ব্যবস্থাপনা প্রকৃতি ও সংরক্ষণ বিভাগের শেরপুর সদর রেঞ্জের কর্মকর্তা মো. আবদুল্লাহ আল আমিন মুঠোফোনে বলেন, ফুলপুর থেকে রোববার শকুন পাখিটিকে নিয়ে আসার পর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এখন আগের চেয়ে কিছুটা সুস্থ। তবে উড়ে যাওয়ার মতো সুস্থ এখনো হয়নি।

তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে শকুনটির বয়স প্রায় ৬০ বছর। এর ডানা দুটি দুই ফুট দীর্ঘ। সম্ভবত খাবারের অভাবে পাখিটি দুর্বল হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম ও এর আশপাশ এবং ভারতের সীমান্ত পাহাড়ি অঞ্চলে এই শকুন বসবাস করে। খাবারের সন্ধানে এ অঞ্চলে এটি আসতে পারে। বার্ধক্যজনিত কারণেও এটি উড়তে পারছিল না।

সপ্তাহখানেক আগে আরও একটি একই প্রজাতির শকুন উদ্ধার করা হয় জামালপুর থেকে। সেটিকেও বন্যজীবন ব্যবস্থাপনা প্রকৃতি ও সংরক্ষণ বিভাগের হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান বন্যজীবন ব্যবস্থাপনা প্রকৃতি ও সংরক্ষণ বিভাগের এ কর্মকর্তা।

উবায়দুল হক/এনএ