যুদ্ধাপরাধ মামলায় সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসেমসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ। রোববার (১৩ মার্চ) দুপুরে উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের পাইথালীর মৎস্য ঘের থেকে আবুল হাসেম এবং মুজিবুর রহমান ধনুকে চাপড়ার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার আবুল হাসেম (৭২) বুধহাটা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান। মুজিবুর রহমান ধনু (৭৫) চাপড়া গ্রামের বাসিন্দা।

সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে হত্যা, অপহরণ এবং নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। মানবতা বিরোধী অপরাধ মামলায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। আজ (রোববার) তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। আদেশ পেয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল মজিবর রহমান ধনুকে আশাশুনির হাসেম রাজাকারের বাগানবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। অপরজন আবুল হোসেনকে চাঁপড়ার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের পরই তাদের সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে পাঠানো হয়েছে।

পুরাতন সাতক্ষীরা এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আলাউদ্দীন সানা জানান, আশাশুনি গ্রামের গোরা ঠাকুরকে হত্যা ও তার মেয়েকে ধর্ষণ করে গুম করার অভিযোগ রয়েছে মজিবর রহমান ধনু, আবুল হোসেন ও লিয়াকত কমান্ডারের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া চাপড়ার আনিসুর রহমান, শরাফপুর গ্রামের মেঘনাথ দাস, তারাপদ দাস ও কেষ্টপদ দাসকে একাত্তর সালে গুলি করে হত্যার অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। আমি ২০১৭ সালের ৭ ডিসেম্বর এ সংক্রান্ত বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলা করি। পরবর্তীতে মামলাটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করার পরামর্শ দেন বিচারক।

আলাউদ্দীন সানা আরও জানান, পরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ফাইলপত্র হস্তান্তর করি। প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সরকার বাদী হয়ে একটি মামলা করে। মামলা নং মিস কেস ৩/২২। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত হন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার পরিদর্শক আমিনুর রশিদ, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুর রহমান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল রাজিয়া সুলতানা চমন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সাতক্ষীরা জেলার সাক্ষ্য সমম্বয়কারী অ্যাডভোকেট শাহ্ আলম জানান, তদন্ত কর্মকর্তারা সবশেষ ফেব্রুয়ারির ১৭ তারিখে অপরাধ সংগঠিত হওয়ার স্থান পরিদর্শন করেন। এর আগেও বেশ কয়েকবার সাতক্ষীরায় এসেছেন। সরেজমিনে পরিদর্শন ও সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তারা ট্রাইব্যুনালে অভিযোগপত্র দেন। তবে অন্যতম আসামি লিয়াকত কমান্ডার গত বছর মারা যাওয়ায় তাকে আসামির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। রোববার বাকি দুই জন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়া হয় ট্রাইবুনালের কাছে। আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে রোববারই তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

আকরামুল ইসলাম/আরআই