অনন্ত বিজয় দাশ

বিজ্ঞানবিষয়ক লেখক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হবে আগামী ৩০ মার্চ। সোমবার (১৪ মার্চ) শুনানি শেষে সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনাল সিলেটের বিচারক নুরুল আমীন বিপ্লব আগামী ৩০ মার্চ রায় ঘোষণার জন্য দিন ধার্য করেন।

বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষে এজাহারদাতার আইনজীবী মোহাম্মদ মনির উদ্দিন।

এই মামলায় তিনজন পলাতক আসামি রয়েছেন। তারা হলেন ফয়সল আহমদ, হারুন অর রশিদ ও আবুল হোসেন।

মামলার এজাহারদাতা ও রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজীবী হিসেবে অংশগ্রহণ করেন, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহিদুল ইসলাম, সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, অ্যাডভোকেট সমর বিজয় সী শেখর, সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি মুমিনুর রহমান ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মনির উদ্দিন, অ্যাডভোকেট নিতু কান্ত দাশ এবং অ্যাডভোকেট নাদিম রহমান। পলাতক আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনায় অংশ নেন অ্যাডভোকেট সাব্বির আহমদ ও ইমরান আহমদ। এ মামলায় ২৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে।

এর আগে এই মামলায় বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) মামলার আসামি আবুল খায়ের উরফে রশিদ আহমদ ও শফিউর রহমান ফারাবীর নিযুক্ত আইনজীবী যুক্তিতর্ক শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন। তবে পলাতক আবুল হোসেন, ফয়সল আহমদ ও হারুন অর রশিদের রাষ্ট্র কর্তৃক নিযুক্ত আইনজীবীর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে না পারায় গেল ১৪ মার্চ পরবর্তী যুক্তিতর্ক শুনানির দিন নির্ধারণ করা হয়।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ১২ মে সিলেট নগরের সুবিদবাজারে নুরানি আবাসিক এলাকার নিজ বাসার সামনে খুন হন অনন্ত। পেশায় ব্যাংকার অনন্ত বিজ্ঞান নিয়ে লেখালেখির পাশাপাশি যুক্তি নামে বিজ্ঞানবিষয়ক একটি পত্রিকা সম্পাদনা করতেন। এ ছাড়া বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন তিনি।

হত্যাকাণ্ডের পর অনন্তের বড় ভাই রতেশ্বর দাশ বাদী হয়ে সিলেট বিমানবন্দর থানায় অজ্ঞাতনামা চারজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। এতে বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখির কারণে অনন্তকে ‘উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী’ পরিকল্পিতভাবে খুন করেছে বলে অভিযোগ করা হয়।

মামলাটি পুলিশ থেকে অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) স্থানান্তর করা হয়। সিআইডির পরিদর্শক আরমান আলী তদন্ত করে ২০১৭ সালের ৯ মে সম্পূরক অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন। এতে সন্দেহভাজন আটক ১০ জনকে অব্যাহতির সুপারিশ করে ছয়জনকে অভিযুক্ত করা হয়। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের ২৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে।

মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার আবুল হোসেন (২৫), খালপাড় তালবাড়ির ফয়সাল আহমদ (২৭), সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বীরেন্দ্রনগরের (বাগলী) মামুনুর রশীদ (২৫), কানাইঘাটের পূর্ব ফালজুর গ্রামের মান্নান ইয়াইয়া ওরফে মান্নান রাহী ওরফে এবি মান্নান ইয়াইয়া ওরফে ইবনে মঈন (২৪), কানাইঘাটের ফালজুর গ্রামের আবুল খায়ের রশীদ আহমদ (২৫) ও সিলেট নগরের রিকাবীবাজার এলাকায় বসবাসকারী সাফিউর রহমান ফারাবী ওরফে ফারাবী সাফিউর রহমান (৩০)।

মাসুদ আহমদ রনি/এনএ