রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরিবারের সদস্যদের মারধরে গুরুতর আহত মিঠু মিয়া (৫০) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তবে মারধরের কারণে অকাল মৃত্যুর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে চেষ্টা করে পরিবারের লোকজন। কিন্তু এলাকাবাসীর বাধার কারণে দাফন করতে পারেননি তারা।

মৃত্যুর ঘটনাটি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) ভোরে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

এর আগে সোমবার (১৪ মার্চ) সন্ধ্যায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত মিঠু মিয়া হারাগাছ পৌর এলাকার দালালহাট মাষ্টারপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে।

গত রোববার (১৩ মার্চ) সন্ধ্যায় ভাই ও ভাবিকে গালাগালি করার এক পর্যায়ে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিঠু মিয়াকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মিঠু একজন মানসিক রোগী। তিনি বিয়ে করেননি। মাঝে মাঝে ভাইসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের গালাগাল করতেন। গত রোববার বাড়ির ভেতরে ঢুকে তার ভাই ও ভাবিকে গালাগালি করতে থাকলে বড় ভাই বাবু প্রতিবাদ করেন। এ সময় দুজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়।

এদিকে, তাদের হাতাহাতি দেখে এগিয়ে আসেন বাবুর স্ত্রী ফুল বেগম। এ সময় দুজনের হাতাহাতিতে ধাক্কা লেগে মাটিতে পড়ে যান ফুল বেগম। পরে খালাতো ভাই দালালহাট গ্রামের বক্কর মিয়ার ছেলে আসাদ ও তুষারকে গিয়ে নালিশ জানান তিনি। এতে আসাদ ও তুষার ক্ষিপ্ত হয়ে মিঠুর বাড়িতে গিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করেন। 

এ সময় মিঠু অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে কার্ডিওলজি বিভাগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে হাসপাতাল থেকে দেওয়া ছাড়পত্রে উল্লেখ করা হয়।

পরে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে গিয়ে দাফনের উদ্যোগ নিলে গ্রামবাসী বাধা দেন। তাদের অভিযোগ, মারধরের কারণে মিঠুর মৃত্যু হয়েছে।

রংপুর মহানগরীর হারাগাছ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম জানান, মিঠুর মৃত্যুর ঘটনায় পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। তবে ময়নাতদন্তের জন্য পরিবারের লোকজন কোনো সহযোগিতা করেননি।

মৃত্যুর ঘটনাটি সন্দেহ হলে মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) ভোরে বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে বলেও জানান ওসি।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরআই