ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর রকেট হামলায় নিহত বাংলাদেশি প্রকৌশলী হাদিসুর রহমান আরিফের (৩৪) দাফন সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) দুপুরে হাদিসুরের নিজ বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামে তাকে দাফন করা হয়।

আবদুর রাজ্জাক হাওলাদারের চার ছেলে-মেয়ের মধ্যে হাদিসুর দ্বিতীয়। তিনি পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। মা-বাবা এবং দুই ভাইয়ের লেখাপড়ার খরচ চালাতেন তিনি। তাকে হারিয়ে আজ নিঃস্ব গোটা পরিবার।

হাদিসুরের দুই ভাই তারেক ও প্রিন্স বলেন, ভাইয়া আমাদের কোনো চাওয়া অপূর্ণ রাখেনি। লেখাপড়ার খরচও বহন করত। আমাদের ভাই আজ নেই, এখন আমরা কীভাবে কী করব বুঝতে পারছি না। নিজেদের লেখাপড়া কীভাবে চালাব আর মা-বাবার চিকিৎসার খরচই বা কোথায় পাব? সরকারের কাছে অনুরোধ, শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী আমাদের একটা চাকরির ব্যবস্থা করা হোক।

হাদিসুরের বাবা আবদুর রাজ্জাক বলেন, আমার সারাজীবনের সঞ্চয় দিয়ে ওরে (হাদিসুর) মেরিন ইঞ্জিনিয়ার বানাইছি। আমি ও আমার স্ত্রী দুজনই অসুস্থ। এখন কীভাবে ছোট ছেলে দুইটারে পড়ালেখা করাব? ছেলে দুইজনের চাকরি হলে ভালোভাবে বাঁচতে পারতাম।

সকালে হাদিসুরের বাড়ি যান বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। তিনি শোক সন্তপ্ত পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করেন। এছাড়া হাদিসুরের ভাইদের চাকরির আশ্বাস দেন।

প্রসঙ্গত, গত ২ মার্চ রাতে ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে আটকা পড়া বাংলাদেশি জাহাজ এমভি বাংলার সমৃদ্ধিতে রকেট হামলা চালায় রুশ সেনারা। এ হামলায় জাহাজের প্রকৌশলী হাদিসুর রহমান আরিফ নিহত হন। ৩ মার্চ সন্ধ্যায় অক্ষত ২৮ নাবিক এবং হাদিসুরের মরদেহ ইউক্রেনের একটি বাংকারে নেওয়া হয়। সেখানে হাদিসুরের মরদেহ রেখে বাকি নাবিকদের নিরাপদে রোমানিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। গত ৯ মার্চ দুপুর ১২টার দিকে নাবিকরা দেশে ফেরেন।

এরপর রকেট হামলায় নিহত প্রকৌশলী হাদিসুর রহমান আরিফের (৩৪) গতকাল রাতে তার নিজ বাড়িতে পৌঁছে। পরে আজ মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) সকাল সাড়ে দশটায় জানাজা শেষে তার নিজ বাড়িতে মসজিদের পাশে তার দাফন সম্পন্ন হয়। সোমবার রাতে হাদিসুরের মরদেহ তার গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় নামাজে জানাজা শেষে দাদা-দাদির কবরের পাশে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

এসপি